বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও সেক্রেটারির নামে মামলা

জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদের’ স্বঘোষিত সভাপতি গোলাম সারোয়ার সরকার ও সেক্রেটারি মো. সারোয়ার হোসেন রুবেল এবং ‘জিয়া প্রজন্মের’ স্বঘোষিত সভাপতি গোলাম সারোয়ার সরকার ও মহাসচিব মাহমুদুল আলম মাহমুদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক এবং মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামে আদালতে পৃথক দুইটি মামলার আবেদন করা হয়।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালতে অ্যাডভোকেট ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানি বাদী হয়ে মামলাটির আবেদন করেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে সংশ্লিষ্ট থানাকে অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে দলটির সভাপতি গোলাম সারোয়ার সরকার ও সেক্রেটারি মো. সারোয়ার হোসেন রুবেলের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালতে অপর মামলাটির আবেদন করেন মো. নিহার হোসেন নামে আরেক আইনজীবী।

আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে সংশ্লিষ্ট থানাকে অভিযোমহাসচিব অধ্যক্ষ মাহমুদুল আলম মাহমুদের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।দু’টি মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. খোরশেদ আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি দলীয় অনুমোদন ব্যতীত ও অজ্ঞাত আসামিদের পূর্ণসমর্থনে নিজেকে স্বঘোষিত মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ‘জিয়া প্রজন্ম’ নামে অনুমোদনহীন ভুয়া সংগঠনের আবির্ভাব করে দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টায় ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বর্ধিত সভাস্থলের স্থানে আসামি সারোয়ার হোসেন রুবেলসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জন ঘটনাস্থলে আসে। রুবেল ‘ভুয়া পরিচয় পত্র’ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দলীয় মহাসচিবের স্বাক্ষর নিজে এবং অন্য আসামিদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সৃজন করে। পরিচয়পত্রটি জাল স্বাক্ষর সম্বলিত এবং জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজনকৃত হওয়ার বিষয়টি আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা কৌশলে ঘটনাস্থল পালিয়ে যায়।

আরেক মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা দলীয় অনুমোদন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদ’ নামে অনুমোদনহীন ভুয়া সংগঠনের আবির্ভাব ঘটিয়ে নিজেরা এই সংগঠনের ভুয়া সভাপতি এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন।

আসামিরা এই ভুয়া সংগঠনের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের কাছে থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করেছে বলে লোক মুখে শোনা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ মার্চ সাক্ষীদের কাছে ২৩ মার্চের ইফতার মাহফিলের খরচ বাবদ ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

এদিকে, গত ২২ মার্চ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম পরিষদ’ নামে একটি ভুয়া সংগঠন সৃষ্টি করে বিভিন্নভাবে প্রতারণা ও অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে।

ভুয়া সংগঠনটি ২৩ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিলেরও আয়োজন করেছে। অবৈধ ও ভুয়া সংগঠনটির সব ধরনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সম্পর্ক না রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো। ভুয়া সংগঠনটির সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমআর/টিএ


Share this news on: