জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বৈঠক প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, "প্রকৃত অর্থে ছাত্র নেতারাই আগ্রহ নিয়ে সেনাপ্রধানের কাছে গিয়েছিলেন, সেনাপ্রধান তাদের ডাকেননি। সোমবার দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে কর্মিসভার আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় নুরুল হক নুর আরও বলেন, ‘গণঅভুত্থানে সেনাপ্রধান শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। সেই সেনাপ্রধানকে বিতর্কিত করা কিংবা সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া, এর পেছনে কোনও চক্রান্ত আছে কিনা তা পরিষ্কার করতে যারা কথাগুলো বলেছেন তাদের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘হাসনাত ও সারজিসের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে? তারা কেন সেখানে গিয়েছিলেন? এ বিষয়গুলো তাদের কাছ থেকে জানা দরকার। হাসনাত-সারজিস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। ছাত্রনেতা হান্নান মাসুদ তার স্ট্যাটাসে বলছেন, “আপনাদের একজন মিথ্যা কথা বলছেন”। দায়িত্বশীল জায়গা থেকে নাগরিক পার্টিকে তদন্ত সাপেক্ষে এর প্রকৃত রহস্য জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। তা না হলে এটি মারাত্মক ক্ষত সৃষ্টি করবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘পুলিশ কাজ করছে না। গত সাত মাস দেশে যে স্থিতিশীলতা রয়েছে তার মূল কারণ হচ্ছে সেনাবাহিনী। তা না হলে দেশ পরিচালনায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হতো। তা ছাড়া গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে বলেছিলেন ১৮ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে।’
নুরুল হক নুর বলেন, গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনরা বলেছিলেন, কাউকে এমপি-মন্ত্রী বানানোর জন্য সাধারণ মানুষ জীবন দেয়নি। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিলোপ করে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং বাংলাদেশ পুনর্নির্মাণের যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়নের পরেই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর হবে।’
তিনি বলেন, ‘গেলো সাত মাসের পর্যবেক্ষণ বলছে, সরকার প্রত্যাশিত মাত্রায় দেশকে এগিয়ে নিতে পারেনি। নানা ধরনের সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। যেকোনও দেশে নির্বাচিত সরকার না থাকলে সবাই একটা ফায়দা নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করে। সেই ষড়যন্ত্র গোটা জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।’
সারজিস-হাসনাতকে ইঙ্গিত করে নুর বলেন, ‘তারা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রেন্ডে আছে। ক্লিক করলেই তাদের নিউজ দেখা যায়। এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন রাষ্ট্র সংস্কার, অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং দেশকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি। সেখানে তারা সেনাবাহিনীকে নিয়ে পড়ে আছে।
‘৭৫ সালে যেভাবে দেখেছি, সামরিক বাহিনীর মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। একইভাবে এখনও সামরিক বাহিনীকে টার্গেট করে একটি অঘটন ঘটানোর পাঁয়তারা চলছে। এ জন্য দেশবাসীসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন থাকতে হবে।’ একই সঙ্গে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় সংলাপ ডাকতে প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানান তিনি।
এমআর/টিএ