বনানীতে শিশু অপহরণ মামলায় দুজনের ফাঁসি, ৮ জনের যাবজ্জীবন

ঢাকার বনানীতে এক শিল্পপতির আট বছর বয়সী মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছেলেকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণের দায়ে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. খাদেম উল কায়েস বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বনানী ফ্লাইওভারের নিচে একটি প্রাইভেট কার আটকে শিল্পপতির ছেলেকে অপহরণ করা হয়। পরে ছেলেটির বাবাকে ফোন করে ১০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। তারা হুমকি দেয়, টাকা না দিলে ছেলেটিকে তারা হত্যা করবে। তবে দর কষাকষিতে এক পর্যায়ে তারা দুই কোটি টাকায় শিশুটিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়।

সে অনুযায়ী ছেলেটির বাবা ৬ মে কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কেটি ৭৩ লাখ টাকা জমা দেন। বাকি ২৭ লাখ   টাকা হাতে হাতে দিয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে থেকে ছেলেকে ফিরে পান তার বাবা।

পরে ১৭ মে ছেলেটির মামা বনানী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা দায়ের করেন। সেদিনই র‌্যাবের একটি দল মিজানসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ জানান, রাষ্ট্রপক্ষে ৩১ জনের সাক্ষ্য শুনে আদালত বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন- ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়ার মো. মশিউর রহমান মন্টু (৪০) ও বরগুনা জেলার আমতলী থানার দক্ষিণ টেপুরার মিজানুর রহমান (৩৫)। তারা থাকতেন রাজধানীর পল্লবীতে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- মো. রেজাউল করিম (৩৬), নজরুল ইসলাম (৩২), মো. আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৮), মো. ইকবাল হোসেন শুভ (২৮), সজীব আহমেদ কামাল (৪৭), মো. আলিম হোসেন চন্দন (২৭), কাওসার মৃধা (২৫), রেজা মৃধা (৩০)।

এই আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিজানুর এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই ভাই কাওসার ও রেজা পলাতক।

যাবজ্জীবনের আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।

অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে দুইজনকে খালাস দেয়া হয়েছে রায়ে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ: গোলাম পরওয়ার Jul 04, 2025
img
ঋতুপর্ণা হলেন বাংলাদেশের মেসি, বললেন বাফুফে কর্মকর্তা Jul 04, 2025
img
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে বিনিয়োগ বাড়বে : গভর্নর Jul 04, 2025
img
ইতিহাসে প্রথমবার, ৩৫টি ভাষায় সরাসরি অনুবাদ হবে মক্কায় জুমার খুতবা Jul 04, 2025
img
ওমানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বড় সুখবর Jul 04, 2025
img
মাল্টা ও লিবিয়া উপকূলে অভিযান, উদ্ধার ১১৭ অভিবাসী Jul 04, 2025
img
বনানীর জাকারিয়া হোটেল হামলা: অভিযুক্তরা শনাক্ত, গ্রেফতারে চলছে পুলিশের অভিযান Jul 04, 2025
img
পিআর চায় অযোগ্যরা, ব্যালট চায় জনগণ : আমিনুল হক Jul 04, 2025
img
ভালুকের আক্রমণে প্রাণ গেল মোটরসাইকেল চালকের Jul 04, 2025
img
বিয়ের আগের দিন ক্যাম্পাসে এসে আটক জবি ছাত্রলীগ নেতা Jul 04, 2025
img
রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ‘সাকিব ও মাশরাফির মতো আমারও ভুল হয়েছে’ Jul 04, 2025
img
দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজগুলো বাদ দেওয়ার আহ্বান ক্লাসেনের Jul 03, 2025
img
এইচএসসি পরীক্ষায় নকল করায় একই কলেজের ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার Jul 03, 2025
img
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড পঞ্চাশ বছরেও কোনো সরকার বন্ধ করতে পারে নাই : নাহিদ ইসলাম Jul 03, 2025
img
পনেরো বছর পর গানে ফিরলেন শঙ্কর চক্রবর্তী Jul 03, 2025
img
‘বর্ডার ২’ করলেও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত দিলজিতের Jul 03, 2025
স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার পরও বৈবাহিক সম্পর্ক;শ্রীঘরে মানবাধিকার কর্মী Jul 03, 2025
বিচার বিভাগের সংস্কার নিয়ে যে জটিলতার কথা জানালেন তারেক Jul 03, 2025
ছোট উদ্যোক্তাদের বিপদে ফেলতে পারে বিটিআরসি নীতি, অভিযোগ বিএনপির Jul 03, 2025
যেকারনে হোয়াইট হাউস থেকে বেড়িয়ে যেতে হয় জাকারবার্গকে Jul 03, 2025