বলিউডে শাহরুখ খানের সাম্প্রতিক দুই বড় হিট ‘পাঠান’ এবং ‘জাওয়ান’ কেবল অর্থনৈতিকভাবে নয়, সাংস্কৃতিক দিক থেকেও এক বিরাট দিগন্ত তৈরি করেছে। প্রতি ছবির আয় কোটি কোটি টাকার বেশি হলেও সাফল্যের প্রকৃত অর্থ কেবল বক্স অফিসের সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয়। এই দুটি ছবি যেন সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে, নতুন ট্রেন্ড সৃষ্টি করেছে এবং দর্শকের মনের প্রতিবাদী শক্তিকে স্পর্শ করেছে।
‘পাঠান’ এবং ‘জাওয়ান’ উভয়ই এমন সময় মুক্তি পেয়েছিল, যখন বিভিন্ন স্তরে তাদের বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। অথচ সেই সব প্রতিবাদকে তারা অতিক্রম করে রেকর্ড ভাঙেছে, সামাজিক মাধ্যমে ট্রেন্ড তৈরি করেছে এবং বিশ্বজুড়ে বক্স অফিসে দাপট দেখিয়েছে। ঘৃণা ছিলই, তবে ভালোবাসা আরও বেশি শক্তিশালী ছিল। এটি শুধু শাহরুখের কমব্যাক নয়, বরং বলিউডে নিজের আধিপত্য প্রদর্শনের এক নতুন ঘোষণাও ছিল।
সমালোচকরা যদিও দাবি করেছিলেন যে এই সফলতা প্রহসনমূলক, তবে বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। ‘পাঠান’ এবং ‘জাওয়ান’ দর্শক শ্রেণির মধ্য দিয়ে সত্যিকারের উন্মাদনা তৈরি করেছে, এমন এক ক্রেজ যা খুব কম ভারতীয় ছবিই ছুঁতে পেরেছে। এটি প্রমাণ করল, এই ছবিগুলি শুধু বক্স অফিসের জয় নয়, বাস্তব ক্রেতা ও দর্শকের উন্মাদনার গল্পও বর্ণনা করেছে।
শাহরুখ খান এই দুটি ছবির মাধ্যমে আবারও প্রমাণ করলেন যে তিনি এখনও বলিউডের কিং। তার স্ফূর্ততা, জনপ্রিয়তা এবং প্রাসঙ্গিকতা অটুট। এভাবে তিনি পরবর্তী দশকেও তার স্থান ধরে রাখতে সক্ষম হবেন বলে মনে হচ্ছে।
কোভিডের পর বলিউড যখন সমস্যায় ছিল, তখন এই দুটি ছবি থিয়েটার সংস্কৃতি ও বড় পর্দার আনন্দ ফিরিয়ে এনেছে। একক-স্ক্রিনের সেই উন্মাদনা, দর্শকের উৎসাহ, এবং বড় সিনেমার প্রতি আস্থা ফিরে এসেছে। এখন যে যেকোনও বড় ছবির লক্ষ্য পাঁচশ কোটি টাকার বেশি আয়, সেই রূপ-রেখা এই দুটি ছবিই স্থাপন করেছে।
‘পাঠান’ এবং ‘জাওয়ান’ কেবল ব্যবসায়িক সাফল্য নয়, বরং বলিউডের সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবনের এক প্রতীক। এটি প্রমাণ করে, বলিউড আবার স্বপ্ন দেখতে পারে, প্রতিবাদকে জয় করতে পারে এবং সিনেমার গল্পের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে পারে। এই দুটি ছবি আসলে বর্তমান সময়ের কিংবদন্তি, যারা দর্শক, সমাজ এবং সংস্কৃতিকে একসাথে স্পর্শ করেছে।
আরপি/টিকে