হাসপাতালে শত শত আহত মানুষ, হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা

মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রাজধানী নেপিডোতে অবস্থিত ১,০০০ শয্যার হাসপাতালে আহত শত শত রোগী ভিড় করছেন। কেউ কেউ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, কারও শরীর থেকে রক্ত ঝরছে।
 
চিকিৎসকরা জানান, ভূমিকম্পে রাজধানীর বড় হাসপাতালটি নিজেই কেঁপে ওঠে। প্রায় আধা মিনিট ধরে মাটি প্রচণ্ডভাবে কাঁপতে থাকে। হাসপাতালের আশেপাশে রাস্তাঘাট ভেঙে যায়। জরুরি বিভাগটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শত শত আহত মানুষ আসছে। কিন্তু এখানকার জরুরি ভবনটি অনেকটা ভেঙে পড়েছে।
 
ব্যাংকক পোস্ট জানিয়েছে, হাসপাতালে অনেক আহতদের আনা হয়েছিল - কেউ কেউ গাড়িতে, কেউ কেউ পিকআপে, আবার কেউ কেউ স্ট্রেচারে করে যাচ্ছিল। তাদের শরীর রক্তাক্ত এবং ধুলোয় ঢাকা।

হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের চিকিৎসা এলাকা থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার সময় বলছিলেন, 'এটি একটি গণ-ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা'।
একজন চিকিৎসক এএফপিকে বলেন, অনেক আহত মানুষ আসছেন। আমি এর আগে এমন কিছু দেখিনি। আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি খুব ক্লান্ত।
 
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, চিকিৎসা নিতে আসা কেউ কেউ ব্যথায় কাঁদছিল। অন্যরা চুপ করে শুয়ে ছিল, আত্মীয়রা তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছে। কেউ কেউ মাথা হাতে নিয়ে হতবাক হয়ে বসে ছিল, তাদের মুখ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রক্তে ভেসে যাচ্ছিল।

মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইং হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা আহতদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন।
 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার সাগাইং শহরের উত্তর-পশ্চিমে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার অগভীর ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে মিয়ানমারের রাজধানী প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। কয়েক মিনিট পর একই এলাকায় ৬.৪ মাত্রার একটি 'আফটারশক' আঘাত হানে।

ভূমিকম্পের সময় এএফপির সাংবাদিকদের একটি দল নেপিদোতে জাতীয় জাদুঘরে ছিল। সেখানে ভূমিকম্পের প্রভাবে ছাদ ভেঙে ইটের টুকরো পড়ে এবং দেয়ালে ফাটল ধরে।

অপরদিকে, প্রতিবেশী থাইল্যান্ড ও চীনেও শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বিশেষ করে থাই রাজধানী ব্যাংককের ভবনগুলো প্রচণ্ডভাবে কেঁপে উঠেছে। ভিডিও ফুটেজে একটি নির্মাণাধীন বিশাল ভবন মুহূর্তেই ভেঙে পড়তে দেখা যায়।

ব্যাংককের বাং সু জেলার ডেপুটি পুলিশ প্রধান ওরাপাত সুকথাই বলেছেন, ৩০ তলা নির্মাণাধীন ভবনটি ধসের পর ধ্বংসস্তূপে অনেকেই আটকে পড়েছেন। তিনি লোকজনের সাহায্যের জন্য চিৎকারের শব্দ শুনেছেন। আমাদের অনুমান শত শত মানুষ আহত হয়েছে, তবে আমরা এখনো হতাহত লোকদের খুঁজছি। আমি আশঙ্কা করছি যে অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। আমরা এর আগে কখনও এত ভয়াবহ ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা পাইনি।

এমআর/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভারতকে ঘিরে ফেলতে চীনকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে বাংলাদেশ: কংগ্রেস Apr 02, 2025
img
সৎ বাবার চাপে রাস্তায় ভিক্ষে করে কেটেছে শৈশব Apr 02, 2025
img
শিশুর পেটে গুলি ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেল Apr 02, 2025
img
বিচ্ছেদ গুঞ্জন অতীত! Apr 02, 2025
img
যারা গুপ্ত রাজনীতি করে তাদের প্রতি শুভকামনা নেই: ছাত্রদল সভাপতি Apr 02, 2025
img
তথ্য উপদেষ্টার বাবার ওপর হামলায় এ্যানির দুঃখ প্রকাশ Apr 02, 2025
img
নতুন রাজনৈতিক দলটির নেতৃবৃন্দদের চাপে প্রধান উপদেষ্টা জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছেন: নাছির Apr 02, 2025
img
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খুঁটিতে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ Apr 02, 2025
img
হাঁটা-চলার জায়গাও ছিল না চিড়িয়াখানায়, দর্শনার্থী প্রায় দুই লাখ Apr 02, 2025
img
সিলেটে মধ্যরাতে বিএনপি-যুবদল সংঘর্ষ Apr 02, 2025