হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যা বললেন তামিম ইকবাল

হার্ট অ্যাটাক হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া তামিম ইকবাল বাসায় ফিরেছেন গতকাল। এর আগে গত সোমবার বিকেএসপিতে খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে গাজীপুরের কেপিজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে এনজিওগ্রাম করলে তামিমের হার্টে ব্লক পাওয়া যায় এবং তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে রিং পরানো হয়। এরপর তাঁকে নিয়ে আসা হয় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে। পরবর্তী সময়ে অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গতকাল দুপুরে বাসায় ফিরেছেন তামিম। বাসায় ফিরে গতকাল রাতে ফেসবুক পোস্টে একটি বার্তা দিয়েছেন তামিম। পাঠকদের উদ্দেশে তামিমের সেই পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো—

আপনাদের সবার দোয়ায় ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে এখন আমি বাসায়।

উথালপাতাল এই চারটি দিনে নতুন জীবন যেমন পেয়েছি, তেমনি আমার চারপাশকে আবিষ্কার করেছি নতুন করে। সেই উপলব্ধির সবটুকুতে মিশে আছে কেবল ভালো লাগা ও কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সবার ভালোবাসার ছোঁয়া ক্যারিয়ারজুড়ে নানা সময়ই পেয়েছি। তবে এবার তা অনুভব করতে পেরেছি আরও তীব্রভাবে। আমি সত্যিই আপ্লুত।

বিকেএসপিতে আমার অসুস্থতার শুরু থেকেই অনেককে পাশে পেয়েছি তাৎক্ষণিকভাবে। ম্যাচ রেফারি দেবু দা (দেবব্রত পাল), বিকেএসপির চিকিৎসকেরা এবং আরও যাঁরা তখন ছিলেন সেখানে, অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার যে ভাই আমাকে দ্রুতগতিতে নিয়ে গেছেন হাসপাতালে, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।

আমাদের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব কীভাবে, আমার আসলে জানা নেই। আমি পরে জেনেছি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেছেন, ডালিম ভাই ওই সময় সঠিকভাবে সিপিআর না দিলে হয়তো আমাকে বাঁচানো যেত না। উপযুক্ত মানুষকে উপযুক্ত সময়ে আমার পাশে রেখে আল্লাহ আমাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়েছেন।

মোহামেডানের সাপোর্ট স্টাফ ওয়াসিমের কথা না বললেও নয়। শুরু থেকে এখনো সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়েই আছে আমার।

কেপিজে হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ–বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তাঁর দক্ষ চিকিৎসক দল তাঁদের পেশাদারত্ব আর আন্তরিকতার মিশেলে যেভাবে দ্রুততায় চিকিৎসা করেছেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকদের মান ও কার্যকারিতাই ফুটে উঠেছে তাতে। আমি পরে শুনেছি, দেশের প্রখ্যাত হৃদ্‌রোগ–বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডা. মারুফ ও তাঁর দল মিরাকল ঘটিয়েছেন।

গোটা চিকিৎসাপ্রক্রিয়ায় কেপিজে হাসপাতালের চিকিৎসক, সেবিকা থেকে শুরু করে যাঁরা যেকোনোভাবে যতটুকু সম্পৃক্ত ছিলেন, সবাইকে হৃদয়ে লালন করব আজীবন। এই হাসপাতালে যতটুকু সময় ছিলাম, তাদের হৃদ্যতার পরশ অনুভব করে যাব সব সময়।

ঢাকা শহরের বাইরে ওই এলাকায় এতটা উঁচু মানের হাসপাতাল আছে, এতটা কুশলী চিকিৎসক দল ও স্টাফরা আছেন, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার এগিয়ে চলার একটি প্রমাণ এটি। দেশজুড়ে নানা জায়গায় এর কাছাকাছি মানের হাসপাতাল যদি আরও কিছু থাকে, আমার মতো আরও অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে।

ধন্যবাদের তালিকা আসলে শেষ হওয়ার নয়। আরও অনেকেই নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকের কথা জানি, অনেকের কথা হয়তো জানি না। এতটুকু জানি, ধন্যবাদ পাওয়ার আশায় তাঁরা কিছু করেননি। আমি তাঁদের ভালোবাসার ঋণে আবদ্ধ সারা জীবনের জন্য।

পুরোপুরি সেরে ওঠার পথ এখনো দীর্ঘ। আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রার্থনায় রাখবেন। সবার জীবন সুন্দর ও শান্তিময় হোক।ভালোবাসা সবার জন্য।

এফপি/এস এন 

Share this news on: