২৩ দিনে শতাধিক কর্মীর পরিশ্রমে ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

ঈদের প্রধান জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের জাতীয় ঈদগাহ মাঠটি । এ মাঠে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের জায়গায় প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন।

ইতোমধ্যে ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ। ঈদগাহ প্রস্তুত করতে সার্বিক দায়িত্বে ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রকৌশল বিভাগ সূত্র বলছে, এবার ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করতে সংস্থাটির ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। মেসার্স আবুল হক অ্যান্ড সন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে মাঠ প্রস্তুতের কাজ দেওয়া হয়েছিল, তারা কাজটি করতে সময় নিয়েছে প্রায় ২৩ দিন। প্রতিদিন শতাধিক কর্মী মাঠ প্রস্তুতে কাজ করেছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মুখপাত্র রাসেল রহমান এ বিষয়ে বলেন, মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে পুলিশ, র‍্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। ওজু ও টয়লেট কেন্দ্রিক মুসল্লিদের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জরুরি স্বাস্থ্যসেবার জন্য মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে।

তিনি বলেন, জাতীয় ঈদগাহে প্রায় পুরুষ মুসল্লির ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৩১ হাজার জন এবং মহিলা ৩৫০০ জন। এখান মোট ফটক করা হয়েছে ৩ টি। পুরুষের কাতারের সংখ্যা ৬৫ টি (বড় আকারের) এবং নারীদের জন্য ৫০ টি (ছোট আকারের)। এখানে এক সঙ্গে ১৪০ অযু করতে পারবে।

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান ঈদ জামাতের আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লির জন্য নামাজের স্থান প্রস্তুত করা হয়েছে।

ঢাকাবাসীকে প্রধান ঈদ জামাতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছি, যাতে মুসল্লিরা স্বাচ্ছন্দ্যে ও নিরাপদে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন।

জাতীয় ঈদগাহ প্রস্তুত করায় জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর মাঠের প্যান্ডেল তৈরি করতে ৪৩ হাজারের বেশি বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। রশি ব্যবহার করা হয়েছে ১৫ টনের বেশি। বৃষ্টি থেকে মুসল্লিদের রক্ষা করতে প্রায় ১ হাজার ৯০০টি ত্রিপল টানানো হয়েছে। টিউবলাইট লাগানো হয়েছে প্রায় ৯০০টি। এবার সিলিং ও স্ট্যান্ড ফ্যান সবমিলিয়ে ১১০০ এর বেশি রাখা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করার জন্য আরামদায়ক কার্পেট বিছানো হয়েছে। তাই কাউকে জায়নামাজ সঙ্গে আনতে হবে না।

জানা গেছে, ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে এই ঈদগাহকে জাতীয় ঈদগাহ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ হাইকোর্টের অধীনে ঈদগাহটি পরিচালিত হলেও দেখভাল করে গণপূর্ত বিভাগ। ঈদের নামাজের জন্য জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করার দায়িত্ব ২০০০ সাল থেকে পালন করছিল ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। কর্পোরেশন দুই ভাগ হওয়ার পর কাজটি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।

আরএ/এসএন

Share this news on: