জাপানে মেগা ভূমিকম্পের আশঙ্কা, মারা যেতে পারে ৩ লাখ মানুষ

জাপানের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে দীর্ঘদিন ধরে একটি মেগা ভূমিকম্পের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ভূমিকম্পে প্রায় ৩ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে এবং দেশটির জিডিপির অর্ধেকের সমান অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে। জাপান সরকার একটি নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) জাপানের মন্ত্রিপরিষদ অফিস থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ মূল্যায়নে অনুমান করা হয়েছে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে ২৭০ ট্রিলিয়ন ইয়েন (১.৮১ ট্রিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হবে। এটি পূর্বের সব অনুমানের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়।

গত জানুয়ারিতে জাপানের ভূমিকম্প তদন্ত প্যানেল আগামী ৩০ বছরের মধ্যে একটি মেগা ভূমিকম্পের সম্ভাবনা ৮০ শতাংশেরও বেশি বলে জানিয়েছে।
'মেগা কোয়াক' বা 'মেগা ভূমিকম্প' হলো ৮ কিংবা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প। এটি সাধারণ ভূমিকম্পের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বা ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে হলে, এটি বিধ্বংসী ক্ষতি ডেকে আনবে।

জাপান সরকারে নতুন প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে, ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে বিশাল সুনামি হতে পারে এবং শত শত ভবন ধসে পড়তে পারে। এতে ২ লাখ ৯৮ হাজার মানুষ মারা যাতে পারেন এবং ১২ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত হবেন - যা জাপানের জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ।

জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত নানকাই খাদ প্রতি ১০০ থেকে ১৫০ বছরে বড় ধরনের ভূমিকম্পের সৃষ্টি করে বলে জানা যায়। শেষ বড় ঘটনাগুলো ঘটেছিল ১৯৪০-এর দশকে। ভূকম্পবিদরা বলছেন, তখন থেকেই পুনরায় চাপ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০১১ সালে উত্তর-পূর্ব জাপানে ৯.০ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর ফলে সুনামি হয় এবং ১৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। সেই সঙ্গে ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চেরনোবিলের পর বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ পারমাণবিক বিপর্যয় দেখা দেয়।

গত বছর জাপান প্রথমবারের মতো নানকাই অঞ্চলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পের পর একটি মেগা ভূমিকম্পের 'বেশি সম্ভাবনা' সম্পর্কে সতর্ক জারি করেছিল।
বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ জাপান। প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে দেশটি। কর্মকর্তারা বলছেন, বড় মাত্রার দুর্যোগ থেকে মানুষদের রক্ষার জন্য আরও প্রস্তুতি প্রয়োজন।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্ববাজারে ফের কমল স্বর্ণের দাম Jul 07, 2025
img
আমরা হাসিনা মুক্ত হয়েছি কিন্তু ষড়যন্ত্র মুক্ত হই নাই : ইকবাল হাসান টুকু Jul 07, 2025
img
জুলাই সনদের জন্য ৫ আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে : নাহিদ Jul 07, 2025
img
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ Jul 07, 2025
img
শাহরুখ-হৃতিকের স্বপ্নের চরিত্রে রণবীর, বাজি না বোকামি? Jul 07, 2025
img
টিজারেই ঝড় তুলল রামায়ণ, শুরুতেই রেকর্ড ভাঙার ইঙ্গিত! Jul 07, 2025
img
আমি খারাপ কিছুতে অংশ নিয়েছি, তাই ভালো কিছু করতে চাই: ইসরায়েলি সেনা Jul 07, 2025
img
রাশমিকার ছুটি কাটে চোখের জলে Jul 07, 2025
img
বাজারে আসছে ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারির নতুন আইফোন! Jul 07, 2025
img
ফ্রান্সের তুলুজে বাংলাদেশ দূতাবাসের মোবাইল সেবা কার্যক্রম Jul 07, 2025
img
থালাপতি বিজয়ের ৯ ছবি প্রমাণ করে, তিনিই আসল ‘মাস এন্টারটেইনার’ Jul 07, 2025
img
‘মৌসুমী’ বিভ্রাটে পড়লেন মৌসুমী হামিদ Jul 07, 2025
img
আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী Jul 07, 2025
img
নেতার ছেলের অশালীন আচরণ, থানায় গেলেন অভিনেত্রী রাখি সাওয়ান্তের বান্ধবী! Jul 07, 2025
img
রিয়ালের ‘গোলমেশিন’কে দলে নিতে ১০ ক্লাবের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই Jul 07, 2025
img
ইউরোপ নয়, নেপাল-ভুটানেই সীমাবদ্ধ বাংলাদেশ ফুটবল দল Jul 07, 2025
img
জাতীয় নির্বাচন পেছাতে চায় না, সুষ্ঠু পরিবেশ চায় জামায়াত: গোলাম পরওয়ার Jul 07, 2025
img
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া Jul 07, 2025
img
সরকারের সুচিন্তিত কৌশলের ফলে মূল্যস্ফীতি দ্রুত কমছে : প্রেস সচিব Jul 07, 2025
img
জাতীয় নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে কোনো কথা আমরা বলিনি: নাহিদ Jul 07, 2025