মিয়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪ হাজার ৫০০। এছাড়া আরও চার শতাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন। দেশটির জান্তা কর্তৃপক্ষ এমনটাই জানিয়েছে।
এদিকে ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা অভিযান অব্যাহত রেখেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। তারা বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানুষের জন্য জরুরিভিত্তিকে আশ্রয়, খাদ্য ও পানি জরুরি। কিন্তু দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ চলায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের কাছে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) এক ভাষণে দেশটির সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং বলেছেন, ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ২ হাজার ৭১৯ জনে পৌঁছেছে।
স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি আরও বলেছেন, ভূমিকম্পে ৪ হাজার ৫২১ জন আহত হয়েছেন এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৪৪১ জন। এদিন নিহতদের সম্মান জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) স্থানীয় সময় দুপুরে মিয়ানমারে পরপর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রথমে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার কয়েক মিনিট পরই ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পুরো দেশ। এতে প্রতিবেশী চীন, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামেও কম্পন অনুভূত হয়। এর মধ্যে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে ইরাবতী নদীর ওপর ৯০ বছরের পুরনো ১ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সেতু ভেঙে পড়েছে। এটি মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের শহরতলির সাথে সাগাইং শহরের সংযুক্ত করেছিল।
মিয়ানমার নাউয়ের তথ্য অনুসারে, মিয়ানমারের মান্দালয় শহরে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে মানুষ চাপা পড়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, মান্দালয়ের ঐতিহাসিক একটি প্রাসাদ আংশিকভাবে ধসে পড়েছে।
জান্তা নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার তথ্য মতে, মান্দালয় অঞ্চলের ভূমিকম্পে ১ হাজার ৫৯১টি বাড়ি, ৬৭০টি মঠ, ৬০টি স্কুল, তিনটি সেতু এবং কমপক্ষে ২৯০টি প্যাগোডা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে।
দ্য ইরাবতীর এক প্রতিবেদন মতে, মিয়ানমারের মান্দালয় ও সাগাইং অঞ্চলে প্রায় ৬০টি মসজিদ ধসে পড়েছে। ধসে পড়া মসজিদগুলোর বেশ কয়েকটি উনিশ শতকের বলে জানা গেছে। মসজিদ ধসে অন্তত ৭০০ জন মুসলিমের মৃত্যু হয়েছে।
এমআর/এসএন