থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ধসে পড়া ভবনের নিচে নিখোঁজ ৭০ জন এখনো জীবিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। একটি স্ক্যানারে তাদের বেঁচে থাকার আলামত ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা।
গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) মিয়ানমারে পরপর দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর কম্পন প্রতিবেশী চীন, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামেও অনুভূত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে।
ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন ধসে পড়ে। ভূমিকম্পে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অসমাপ্ত ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ভবনটিতে শতাধিক নির্মাণশ্রমিক আটকে পড়ে।
ব্যাংকক পুলিশ গত রোববার এক বিবৃতিতে বলে, আটকে পড়াদের বেশিরভাগই হয়ত মারা গেছেন। কাউকে জীবিত খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
পুলিশ আরও জানায়, ‘উদ্ধার অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও তারা এখন পর্যন্ত কাউকে জীবিত বের করতে পারেনি। এছাড়া ভবনটির ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে কমপক্ষে দুই মাস সময় লাগবে।’
স্থানীয় একটি সংবাদ সংস্থার মতে, রোববার পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। ৩২ জন আহত এবং ৮৩ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন যাদের বেশিরভাগই ধসে পড়া ভবনের নির্মাণ শ্রমিক।
তবে ভূমিকম্পের পাঁচদিন পর মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে রুয়ামকাতানিউ রেসক্যু ফাউন্ডেশন নামে একটি উদ্ধারকারী দল বলছে, ভবনের ধ্বংসস্তূপে নিখোঁজ ব্যক্তিদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই ফাউন্ডেশন বলেছে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর সরবরাহ করা স্ক্যানারে ৭০টি চিহ্ণ শনাক্ত হয়েছে। এই চিহ্ণগুলো নিখোঁজ ব্যক্তিরা হতে পারে। তারা আরও বলেছে, ধসে পড়া ভবনের ১৭তম ও ২১তম তলার মাঝামাঝি স্থানে চিহ্নগুলো শনাক্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের সময় বেশিরভাগ নিখোঁজ ব্যক্তি সেখানে কাজ করছিলেন।
ব্যাংককের ডেপুটি গভর্নর তাভিদা কামোলভেজ বলেন, ৭০টি চিহ্ন নিখোঁজ ব্যক্তিদের কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে এর মধ্যে ছয়টি চিহ্ণ মানবদেহ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভবনটির মেঝেগুলো একটার ওপর একটা ভেঙে পড়ে। তাই কোন তলায় কতজন ছিল তা জানা যায়নি।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, তারা নিখোঁজ নির্মাণশ্রমিকদের উদ্ধারে যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন এবং এরই মধ্যে অনেকটা অগ্রগতি করেছেন। তবে স্বীকার করেছেন যে, আটকে পড়া মানুষদের কাছে পৌঁছানো একটি কঠিন। এদিকে ভবনের ধ্বংসস্তূপের সামনে প্রিয়জনদের জীবিত ফিরে পাওয়ার জন্য উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছেন পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন।
আরএ/এসএন