শুল্ক তুলে না নিলে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিল চীন

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের শতাধিক দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর চীন অবিলম্বে এ পদক্ষেপ বাতিল করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, অন্যথায় নিজের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য তারা পাল্টা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। 

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপে বছরের পর বছর ধরে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনার মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বার্থের ভারসাম্য আর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থেকে দীর্ঘদিন ধরে তারা যে ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছে তা উপেক্ষিত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, চীন দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করে এবং নিজের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত করতে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।

রয়টার্স বলছে, আমদানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঢালাও শুল্ক আরোপের পদক্ষেপে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোর গভীর বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে আর তা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনকে উল্টে দিতে পারে।

বুধবার ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে চলতি বছরের প্রথমদিকে আরোপ করা ২০ শতাংশ শুল্কের ওপর নতুন করে আরও ৩৪ শতাংশ আরোপ হবে। এতে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা মোট শুল্ক ৫৪ শতাংশে দাঁড়াচ্ছে। এটি নির্বাচনী প্রচারণাকালে ট্রাম্পের দেওয়া ৬০ শতাংশ শুল্কের হুমকির প্রায় কাছাকাছি।

বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে শনিবার থেকে প্রবেশ করা সব দেশের প্রায় সব ধরনের পণ্য ১০ শতাংশ ভিত্তি শুল্কের মুখোমুখি হবে। চীনের ওপর আরোপিত নতুন ৩৪ শতাংশ শুল্কের মধ্যে এই ভিত্তি শুল্কও ধরা হয়েছে। আর এই অতিরিক্ত বর্ধিত ‘সম্পূরক শুল্ক’ ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।

ট্রাম্প ‘ডি মিনিমিস’ হিসেবে পরিচিত শুল্ক এড়ানোর একটি বাণিজ্য প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্বাহী আদেশও সই করেছেন। এই প্রক্রিয়ার অধীনে চীন ও হংকংয়ের স্বল্প মূল্যের প্যাকেজগুলো বিনা শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারতো।

২০২০ সালের যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির অনুযায়ী ১ এপ্রিল পর্যন্ত চীন তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে কি না, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।

এই চুক্তি অনুযায়ী দুই বছর সময়ের মধ্যে চীনের ২০ হাজার কোটি ডলারের মার্কিন পণ্য কেনার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারী আঘাত হানার পর বেইজিং লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়।

চীনের শুল্ক তথ্যে থেকে দেখা গেছে, বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ২০১৭ সালে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল আর গত বছর ওই অঙ্ক বেড়ে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার হয়েছিল।

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ চীনকে বিকল্প বাজারগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করতে পারে, কিন্তু অন্য কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ক্রয় ক্ষমতার ধারের কাছেও নেই। চীনের উৎপাদকরা প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৪০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য বিক্রি করে।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আল্লু অর্জুনের নায়িকা হতে চান না প্রিয়াঙ্কা! Apr 10, 2025
img
নীরবতা অনেক সময় সোনার চেয়েও দামি : প্রেস সচিব Apr 10, 2025
img
প্রশ্নফাঁস যাতে না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে : শিক্ষা উপদেষ্টা Apr 10, 2025
img
প্রবেশপত্র না পাওয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ Apr 10, 2025
img
৬০ দিনের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল : শিক্ষা উপদেষ্টা Apr 10, 2025
img
গাজায় অভিযানে আপত্তি, ৯৭০ জন বিমানবাহিনীর সদস্যকে বহিষ্কারের হুমকি দিল ইসরায়েল Apr 10, 2025
img
শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা Apr 10, 2025
img
ট্রাম্পের শুল্ক শিথিলতার ইঙ্গিতেই শেয়ার বাজারে ঝড়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড Apr 10, 2025
img
বেনাপোল থেকে ৪ ট্রাক রপ্তানি পণ্য ফেরত এসেছে Apr 10, 2025
img
চীনের দিকে তাকিয়ে ট্রাম্প, বললেন ‘শি বিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমানদের একজন’ Apr 10, 2025