শনিবার ঢাকায় আসছে আইএমএফের প্রতিনিধি দল

চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ শিগগিরই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি হিসেবে ২৩৯ কোটি ডলার পেতে যাচ্ছে। তবে অর্থ ছাড়ের আগে আইএমএফ নির্ধারিত বিভিন্ন শর্ত পর্যালোচনা করবে।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকায় পৌঁছাবে। প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় অবস্থানকালে দুই সপ্তাহব্যাপী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, কিস্তি ছাড়ের পূর্বশর্ত হিসেবে যেসব অর্থনৈতিক ও নীতিগত সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলোর অগ্রগতি মূল্যায়ন করতেই এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের (৮ আগস্ট) পর আইএমএফের বড় পরিসরের দ্বিতীয় সফর। এই সফরের ফলাফল নির্ভর করবে কিস্তির অর্থ ছাড়ের সিদ্ধান্তের ওপর, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর তিনটি কিস্তির অর্থ বাংলাদেশ পেয়েছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার, এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ পায়। মোট তিন কিস্তিতে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ, তবে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় এখনও বাকি রয়েছে, যা ২৩৯ কোটি ডলার।

সরকার আশা করছে, আগামী জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পাওয়া যাবে।

এদিকে সম্প্রতি অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইআরএফের সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেট সহায়তার জন্যই আইএমএফ ঋণ প্রয়োজন। এ কারণেই বাংলাদেশ সরকার ও আইএমএফ যৌথভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইএমএফের ঋণের দুটি কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পেতে বাংলাদেশের সামনে মোটাদাগে তিনটি প্রধান বাধা রয়েছে। এগুলো হল— মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ০.৫ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব আদায়, এবং এনবিআরের রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করা।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইএমএফকে জানানো হয়েছে যে, এসব শর্ত বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করার পদক্ষেপ ছাড়া বাকি দুটি শর্তে তেমন অগ্রগতি নেই।

তবে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে মুদ্রা বিনিময় হার নির্ধারণ করা হচ্ছে, যার ফলে হঠাৎ ডলারের দাম খুব বেশি বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বর্তমানে ডলারের দাম ১২২ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে।


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে : আলতাফ হোসেন চৌধুরী Nov 06, 2025
img
সালমানের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতার মামলা Nov 06, 2025
img
গণসংযোগে নিহত সরওয়ার বিএনপির কেউ নন : আমীর খসরু Nov 06, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিলেন বিএনপির ২৮ নেতাকর্মী Nov 05, 2025
img
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে : বাবুল Nov 05, 2025
img
চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের Nov 05, 2025
img
কুসিকের বিএনপিপন্থি সাবেক কাউন্সিলররা সমর্থন জানালেন মনিরুল হককে Nov 05, 2025
img
রাতে ব্রুজের বিপক্ষে অনিশ্চিত লামিনে ইয়ামাল! Nov 05, 2025
img
মুঞ্জ্যা’র মূল চরিত্রে ভাবা হয়েছিল শ্রদ্ধা কাপুরকে! Nov 05, 2025
img
নেত্রকোনার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গ্রেপ্তার Nov 05, 2025
img
পদ্মার ন্যায্য পানি বণ্টনের দাবিতে বিএনপির সমাবেশ Nov 05, 2025
img
মামদানির সাফল্যে তার মায়ের বার্তা Nov 05, 2025
img
এনসিপি অচিরেই তাদের ভুল বুঝতে পারবে: মুনতাসির মাহমুদ Nov 05, 2025
img
নতুন অধ্যায়ের সন্ধানে শ্রীলীলা! Nov 05, 2025
img
পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করতে পারে রাশিয়া Nov 05, 2025
img
আমির-সালমানের অদ্ভুত জুটি, আজও দর্শকদের প্রিয় Nov 05, 2025
img
নির্বাচনেই জাতির ভাগ্যের ফয়সালা হবে: জামায়াত আমির Nov 05, 2025
img
সংগীত চর্চায় সৌদি সরকার নিচ্ছে বড় পদক্ষেপ Nov 05, 2025
img
শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ রাষ্ট্রপতির কাছে নেই: হাবিবুর রহমান হাবিব Nov 05, 2025
img
বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জনে ঐশ্বরিয়ার স্পষ্ট জবাব! Nov 05, 2025