বর্তমানে দর্শকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় নাম আইশা খান। খুব কম সময়েই তিনি নিজের অভিনয় দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। টিভিসি এবং উপস্থাপনায় প্রথম শুরু করলেও, অভিনয়ে পা রাখার পর দ্রুতই নিজের প্রতিভার মাধ্যমে দর্শকদের নজর কেড়েছেন আইশা। প্রথম সারির অভিনেতাদের সঙ্গে জুটি বেঁধে একে একে জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করে চলেছেন তিনি, যা তার অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ।
এই ঈদেও মুক্তি পেয়েছে তিনটি নাটক। আইশার সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।
ঈদ কেমন কাটল?
ভালো কেটেছে, আলহামদুলিল্লাহ। পরিবারের সবাইকে নিয়ে সময় কাটিয়েছি।
ঈদের পর থেকে ফোন, ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আপনাকে পাওয়া যাচ্ছিল না...
ঈদের আগে শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। ভাবলাম ঈদে একটু নিরিবিলি থাকি। তা ছাড়া এখন দেশের বাইরে আছি। মেসেঞ্জার ছাড়া অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধ রেখেছি। দেশে ফিরে সব চালু করব।
‘সে প্রথম প্রেম আমার’, ‘দহন’ ও ‘তোমার মায়ায়’—ঈদে এসেছে নাটকগুলো। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
দারুণ। আসলে এখানে আমার খুব বেশি ক্রেডিট আছে বলে মনে করি না। ফারহান আহমেদ জোভান ভাই ও মুশফিক আর ফারহান ভাইয়ের নিজস্ব একটা ফ্যানবেজ আছে।
দর্শক মুখিয়ে থাকে তাঁদের নাটক দেখার জন্য। আমি তো মাত্র দুই বছর নাটক করছি। তাঁদের তুলনায় আমার দর্শক অনেক কম। এই যে নাটকগুলো তিন মিলিয়ন, আড়াই মিলিয়ন করে ভিউ হয়েছে, সেটা জোভান ভাই ও ফারহান ভাইয়ের কারণেই। হয়তো আরো ভিউ হতো। তবে খেয়াল করেছেন, দর্শক এখনো ঈদের সিনেমায় মজে আছেন। ওটিটিতে দুটি বড় কাজ এসেছে। আশফাক নিপুণ ভাই ও শিহাব শাহীন ভাইয়ের মতো নির্মাতারা বরাবরই ওটিটিতে সফল। কিন্তু সিনেমার জোয়ারে এবার সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেননি। অবশ্য আমিও চাই সিনেমার দিন রঙিন হোক। বছরে আবার ৬০-৭০টা করে ছবি মুক্তি পাক।
নিলয় আলমগীরের সঙ্গে আপনার নাটক ‘গুণ্ডা’ কোটি ভিউ পেয়েছে। এর আগে আপনার আর কোনো নাটক কোটির ঘরে পৌঁছেছিল?
মুশফিক আর ফারহান ভাইয়ের সঙ্গে ‘দুই জীবন’ এক কোটি ৬০ লাখের বেশি ভিউ পেয়েছিল। এটা গত বছরের নাটক। এর পরেই ‘গুণ্ডা’ কোটির ঘরে এলো। নাটকটা যে এ রকম সাড়া ফেলবে সেটা শুটিংয়ের সময়ই বুঝতে পেরেছিলাম। নিলয় ভাইয়ের ফ্যানবেজ সম্পর্কে তো সবার ধারণা আছে। দর্শক সব সময় তাঁর বিপরীতে নতুন অভিনেত্রী দেখতে পছন্দ করেন। আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও ‘গুণ্ডা’ এ রকম সফল হতো।
তৌসিফ মাহবুব, জোভান, নিলয়, ফারহানের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করছেন। সহশিল্পী হিসেবে কে কেমন?
তৌসিফ ভাই শুটিংয়ে আমাকে খুব সাহায্য করেন। সেটে কোনো তড়িঘড়ি করেন না। জোভান ভাইও একই রকম। এমনও হয়েছে, আমি চরিত্রের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে পারছি না। তিনি আমাকে সাহায্য করেছেন। অন্যদিকে নিলয় ভাই খুব চিল মুডে থাকেন। তিনি স্পটে খুব হাসিখুশি থাকেন। একদমই প্যারা নেন না। আর ফারহান ভাইয়ের সঙ্গে তো সবচেয়ে বেশি নাটক করেছি। ফলে তাঁর সঙ্গে আমার বন্ডিং বেশ ভালো। তিনি আমাকে বোঝেন, আমিও তাঁকে বুঝতে পারি।
ভালোবাসা দিবসেও আপনার কয়েকটি নাটক এসেছিল। সেগুলোতে কেমন সাড়া পেয়েছিলেন?
এবার ভালোবাসা দিবসের নাটক নিয়ে খুব হতাশ ছিলাম। ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে যে নাটকগুলোতে অভিনয় করেছিলাম বেশির ভাগই আসেনি। শুধু ‘গুণ্ডা’, ‘ব্যথার বাগান’ এসেছিল আর ওটিটিতে ‘নেক্সট ডোর নেইবার’। তবে সবই দর্শক পছন্দ করেছে।
ওটিটিতে নতুন কী করছেন?
তিন বছর তো ওটিটিতে কাজ করেছি। এখন একটু বিরতি নিতে চাই। এ বছর ওটিটিতে আমাকে পাবেন না। যদি সে রকম কোনো লোভনীয় চরিত্র ও গল্প পাই, নির্মাতাও প্রথম সারির হন তাহলে হয়তো আগামী বছর পাবেন।
কোরবানির ঈদের কাজ শুরু করবেন কবে থেকে?
এখন প্ল্যান চলছে। দেশের বাইরে আছি, তবু মেসেঞ্জারে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে শুটিং শুরু করতে পারি।
‘ভয়াল’ মুক্তির পর নতুন আর কী চলচ্চিত্র আছে হাতে?
নেই। সোহেল আরমান ভাইয়ের ‘সংবাদ’-এ কাজ শুরু করেছিলাম। প্রথম লট শুটিংয়ের পর আর কোনো খবর নেই। নির্মাতা বা প্রযোজক কেউই যোগাযোগ করেন না। এমন হলে মন ভেঙে যায়। কাজ করার আগ্রহ থাকে না।
আরএ/এসএন