ওপার বাংলার সিনেমার একসময়ের শীর্ষ নায়িকা দেবশ্রী রায়, যিনি বাণিজ্যিক এবং আর্ট ফিল্মে অভিনয় করে টলিউডে নিজের আলাদা পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন। তবে তার জীবনেও এক মর্মান্তিক প্রেমের গল্প রয়েছে—যার কেন্দ্রে ছিলেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা সন্দীপ পাতিল।
ছোটবেলায় ‘কুহেলি’ ছবিতে চুমকি চরিত্রে নজর কাড়া দেবশ্রী, তরুণ মজুমদারের ‘দাদার কীর্তি’ ছবিতে অভিনয় করে যুবসমাজের হৃদয়ে স্থায়ী আসন গড়ে তোলেন। টালিগঞ্জের গণ্ডি পেরিয়ে বলিউডেও নিজের অবস্থান তৈরি করেছিলেন তিনি। আর সেখানেই পরিচয়, প্রেম এবং পরিণতির গল্প শুরু হয় সন্দীপ পাতিলের সঙ্গে।
আশির দশকে ভারতীয় ক্রিকেটের হার্টথ্রব ছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটার সন্দীপ পাতিল। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য সন্দীপ অভিনয়ের প্রস্তাব পান ‘কভি আজনবি থে’ ছবিতে। এই ছবিতেই তাঁর সহ-অভিনেত্রী ছিলেন দেবশ্রী রায় ও পুনম ধিলন। শোনা যায়, শ্যুটিং চলাকালীনই দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
তখন বলিউডে একাধিক ছবিতে কাজ করছিলেন দেবশ্রী। অরুণ গোভিল, পঙ্কজ ধীর, শশী পুরীর মতো অভিনেতাদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করছিলেন তিনি। কিন্তু হৃদয় জয় করেন সন্দীপ পাতিল। এতটাই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল যে, দেবশ্রীর কলকাতার বাড়িতেও যেতেন সন্দীপ। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, এই প্রেম একদিন বিয়েতে গড়াবে।
কিন্তু গল্পের মোড় ঘোরে। জানা যায়, তখনও বিবাহিত ছিলেন সন্দীপ পাতিল। স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও দেবশ্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি। গুঞ্জন ছড়ায়, দেবশ্রীর সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই ভেঙে যায় তাঁর প্রথম সংসার। এমনকি সেই সময় একটি ছবির জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরও বাতিল করেন তিনি—শুধু দেবশ্রীর সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য। যদিও এই দাবি কখনও সরাসরি স্বীকার করেননি কেউ।
তবে কিছুদিন পরই সম্পর্ক থেকে সরে আসেন দেবশ্রী। বলা হয়, কেচ্ছায় জড়াতে চাননি তিনি। সন্দীপ পাতিলও পরে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন এবং তাঁর দুটি সন্তান হয়। দেবশ্রী ফিরে আসেন কলকাতায়। এই প্রেমের অভিঘাতে থেমে যায় বলিউডের ক্যারিয়ারও।
এদিকে তখনও প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেবশ্রীর সম্পর্ক শুরুই হয়নি। পরে সেই সম্পর্ক গাঢ় হলেও, সেখানেও পরিণতি মেলে না। কিন্তু আজও টালিউডের বাতাসে ভেসে বেড়ায় দেবশ্রী-সন্দীপের সেই অগোচর প্রেমের গল্প। আর দেবশ্রী? তিনি এই সম্পর্ক নিয়ে কখনও প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।
এই প্রেম শুধু ব্যক্তিগত আবেগের গল্প নয়, এটি এক সম্ভাবনাময় সম্পর্কের করুণ পরিণতির চিহ্ন হয়ে রয়ে গেছে টলিউড ও ক্রিকেট দুনিয়ার ইতিহাসে।
এসএম