রাজধানীর মিরপুরে এক বিএনপি নেতা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রহত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মাইনুদ্দিন হাওলাদারকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুরের কল্যাণপুর নতুনবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মাইনুদ্দিন হাওলাদার ওরফে পিয়াজ মাইনুদ্দিন মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ও একই থানার মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি। তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ২৫ আগস্ট মিরপুর মডেল থানায় একটি ছাত্রহত্যা মামলা হয়। তিনি ওই মামলার ২৩ নম্বর আসামি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রহত্যা মামলার আসামি মাইনুদ্দিন কল্যাণপুর নতুনবাজার এলাকায় অবস্থান করছেন- এমন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে মিরপুর মডেল থানার একটি টিম সেখানে উপস্থিত হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মাইনুদ্দিনকে আটক করে গাড়িতে তোলেন। এ সময় মাইনুদ্দিনকে ছাড়িয়ে নিতে মিরপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি শাকিল আহমেদ স্বপন দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।
একপর্যায়ে বিএনপি নেতা শাকিল আহমেদ স্বপন পুলিশের কাছে তার রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরে মাইনুদ্দিনকে ছেড়ে দিতে বলেন। একপর্যায়ে পুলিশের গাড়ি থেকে মাইনুদ্দিনকে ছিনিয়ে নেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এদিকে এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও এবং স্থিরচিত্র যুগান্তরের হাতে এসেছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের গাড়িতে আটক থাকা মাইনুদ্দিনকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়াচ্ছেন বিএনপি নেতা শাকিল আহমেদ স্বপন ও তার অনুসারীরা।
এদিকে ছাত্রহত্যা মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা একটি গোপন প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে বিএনপি নেতা শাকিল আহমেদ স্বপনের জড়িত থাকার তথ্য উঠে এসেছে।
পুলিশের ওই গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- মিরপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি শাকিল আহমেদ স্বপনের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছাত্রহত্যা মামলার আসামি মাইনুদ্দিনকে জোর করে পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা শাকিল আহমেদ স্বপন বলেন, আমি এ ঘটনায় জড়িত নই। লোকজনের হট্টগোলের খবর শুনে সেখানে গেছি। মাইনুদ্দিনকে আমি ঠিকমতো চিনি না। তিনি ছাত্রহত্যা মামলার আসামি কিংবা আওয়ামী লীগ করেন কিনা তাও আমার জানা নেই। আমি ১৭ বছর এলাকার বাইরে ছিলাম। পুলিশের কাছ থেকে কেউ আসামি ছিনিয়ে নিয়েছে কিনা তাও জানি না।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, এ ঘটনা আমি মঙ্গলবার রাতে শুনেছি। যদি ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে শাকিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমন বলেন, মাইনুদ্দিন হাওলাদারের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা সঠিক নয়।
এফপি/টিএ