বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা শিথিল করবে ভারত। দুই দেশের শীর্ষ বৈঠকের পর এমন প্রত্যাশা করছে ঢাকা। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এতে দুই দেশেরই স্বার্থ উদ্ধার হবে। এখন দিল্লির সিদ্ধান্তের অপেক্ষা। বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। তাই দ্রুত জটিলতা নিরসনের পরামর্শ তাঁদের।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতনের দিন, ৫ আগস্ট, আক্রান্ত হয় ধানমন্ডির ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ২৬ আগস্ট ভারতীয় ভিসা সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপরেই নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখিয়ে সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। একে একে চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও রাজশাহীতেও বন্ধ হয়ে যায় ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র।
শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপোড়েন এবং নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে ভিসা সেন্টারে ফিরতে চান না কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে অধ্যাপক ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের পর ভিসা কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ার আশায় রয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ভিসার ব্যাপারটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমরা চাইবো তারা এটি সহজ করুক। কিন্তু যদি না করে, তাহলে তো প্রকৃতিতে কোনো ভ্যাকুয়াম থাকে না—যদি ভিসার অভাবে লোকজন যেতে না পারে, তারা অন্য কোথাও যাবে, এবং যাচ্ছে ইতিমধ্যে। তারা যদি চায় সহজ করে, তাহলে তাদেরও স্বার্থ উদ্ধার হবে, আমাদেরও।”
ঢাকা-দিল্লি দূরত্ব কমাতে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, “যদি দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চান, মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়াতে চান, তাহলে ভিসা না খুলে আপনি তা করতে পারবেন না। আমি মনে করি, সীমিত আকারে খুলে দিলে এবং এক-দু’মাস পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাবে মানুষের প্রতিক্রিয়া কেমন। আমাদের প্রয়োজন রয়েছে কম খরচের স্বাস্থ্যসেবা এবং পর্যটনের সুবিধা—যাতে ভারতও লাভবান হবে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত বছর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ভারতে ভ্রমণকারী পর্যটকদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন বাংলাদেশিরা।
এফপি/এস এন