মেট্রো রেলে দাঁড়িয়ে যাতায়াত করেন উপদেষ্টা, ছবি ভাইরাল

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান মেট্রো রেলে দাঁড়িয়ে যাতায়াত করছেন, এমন একটি পুরনো ছবি ভাইরাল হয়েছে। রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে সেই ছবিটি পোস্ট করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

হাসনাত তার পোস্টে বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করি। তবে সমালোচনার পাশাপাশি এই সরকারের ভালো কাজেরও প্রশংসা করা উচিত।সেই আলোচনায় কিছু উপদেষ্টার কাজ এবং উদ্যোগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মাননীয় উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের লক্ষণীয় প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য।’
 
যেমন ধরুন, দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বকেয়া পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের নিরলস প্রচেষ্টায় তা কমে এখন প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।

এবারের ঈদে সারা দেশে যান চলাচল ছিল তুলনামূলকভাবে স্বস্তিদায়ক। সড়কে যাত্রীদের ন্যায্য ভাড়ায় বাড়ি ফেরার নিশ্চয়তা দিতে সরকার সফলভাবে কাজ করেছে। অন্যবারের মতো দীর্ঘ যানজটের দুর্ভোগ মানুষকে পোহাতে হয়নি। ট্রেনের টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইনের ভোগান্তিও দেখা যায়নি।

আমরা সাধারণত দেখে আসছি—ইফতার, সাহরি ও পুরো রমজানজুড়ে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় জনজীবন অতিষ্ঠ থাকে। কিন্তু এবার দেশের মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ উপভোগ করেছে। সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের জন্য রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে তিনি ও তার টিম আগেভাগেই পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করেছিলেন।
 
দীর্ঘদিন ধরে তিলে তিলে ধ্বংস হওয়া রেল খাতকে বাঁচাতে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা আমাদের করা উচিত। রেলকে দুর্নীতিমুক্ত, যাত্রীবান্ধব ও আধুনিক করার পাশাপাশি, এটিকে লোকসানের অভিশাপ থেকে মুক্ত করাও অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য।ফাওজুল কবির খান সেই লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তিনি যখন নিজে রেলে চড়ে অফিস করেন, তখন মনে হয়—তিনি সত্যিই সঠিক ট্রাকে আছেন।

তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, রেলের হাসপাতালগুলোতে এখন থেকে শুধু রেলকর্মী নয়, সাধারণ মানুষও চিকিৎসাসেবা পাবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে। এতে সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি সেবা পাওয়ার সুযোগ আরো বাড়বে।

সন্দ্বীপের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করতে তিনি যেসব উদ্যোগ নিয়েছেন, সেগুলো সফল করতে সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে সরকারকে সহযোগিতা করছেন। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে কেউ সন্দ্বীপের জন্য কাজ করেনি—শুধু মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু তিনি সত্যিকার অর্থে সেখানে কাজ করছেন। তবু নিজের নামে স্মৃতিচিহ্ন রাখছেন না, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বড় করে নাম লেখাচ্ছেন না, বাহাদুরি দেখাচ্ছেন না—কারণ, তিনি বিশ্বাস করেন, কাজই মানুষকে বড় করে, বাকি সবই গৌণ।

বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে যুগের পর যুগ ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও লোডশেডিং যেন ছিল নিয়তির মতো। এই বাস্তবতা শহরের কাচঘেরা দপ্তর পেরিয়ে কখনোই নীতিনির্ধারকদের কানে পৌঁছায়নি। গ্রীষ্মের দাবদাহে একটি ফ্যানের বাতাস নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ছিল বিলাসিতা। সেই প্রেক্ষাপটে ফাওজুল কবির খান যখন বলেন, ‘লোডশেডিং হলে আগে ঢাকায় হবে, পরে গ্রামে’—তখন দেশের মানুষ আশান্বিত হয়। আমরাও চাই, গ্রামীণ মানুষের প্রতি অবহেলা হ্রাস পাক। কাঠামোগত বৈষম্যের অবসান হোক।
 
ব্যক্তিগতভাবে আমি সবচেয়ে মুগ্ধ হয়েছি যখন তিনি বলেছেন—সড়কে যাত্রীদের নিরাপদ চলাচলের দায়িত্ব সরকার নিচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনায় সরকারি সংস্থার দায় থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও তিনি দিয়েছেন। যেখানে আমাদের সংস্কৃতি হলো দায় না নেওয়ার, সেখানে এই ঘোষণাটি এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

আগামীর বাংলাদেশকে পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিতে ফাওজুল কবির খানকে ধন্যবাদ। তরুণ প্রজন্ম কি পারবে তার কর্মউদ্যম, সততা এবং দেশপ্রেমকে ধারণ করে বাংলাদেশের হাল ধরতে? এই আত্ম-অনুসন্ধানটাই এখন আমাদের জন্য সবচেয়ে জরুরি। ইনকিলাব জিন্দাবাদ!


এমআর/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
সরকারের তিন উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে: ডা. তাহের Nov 14, 2025
img
এবার বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিলেন শেখ হাসিনা Nov 14, 2025
img
নারীদের ঘরে ঢুকিয়ে দিতে ৫ ঘণ্টা কর্মঘণ্টার কথা বলছে: সেলিমা রহমান Nov 14, 2025
img
আকর্ষণীয় হতে গিয়ে বিপদের মুখে অভিনেত্রী শার্লিন Nov 14, 2025
img
নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ: প্রধান উপদেষ্টা Nov 14, 2025
img
মুরাদ-তাইজুলের ঘূর্ণিতে ইনিংস ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ Nov 14, 2025
img
একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক : নুরুল হক নুর Nov 14, 2025
img

প্রেস সচিব শফিকুল আলম

পত্রিকা, টিভি চ্যানেল, অনলাইনগুলো ইচ্ছেমতো বানিয়ে বানিয়ে খবর ছাপিয়ে পার পেয়ে যায় Nov 14, 2025
img
মিরসরাইয়ে পদ ফিরে পেলেন বিএনপি-যুবদলের ৩ নেতা Nov 14, 2025
img
স্পটিফাই-এ এবার দেখা যাবে ভিডিও গানও! Nov 14, 2025
img

তিন উপদেষ্টার অপসরণের দাবি আট দলের

একই দিনে গণভোট-নির্বাচন সংস্কারকে গুরুত্বহীন করবে : ডা. তাহের Nov 14, 2025
img
পৃথিবী ও সূর্যের দিকে ধেয়ে আসছে রহস্যময় ধূমকেতু Nov 14, 2025
img
জুলাই সনদ যেভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে বিএনপি অক্ষরে অক্ষরে সেটি পালনে প্রস্তুত: সালাহউদ্দিন আহমদ Nov 14, 2025
img
গাজার দিকে ধেয়ে আসছে ভয়াবহ ঝড়, বড় ঝুঁকিতে ৯ লাখ ফিলিস্তিনি Nov 14, 2025
img
রচনা ব্যানার্জি নয়, এবার ‘দিদি’দের সামলাবেন মীর আফসার! Nov 14, 2025
img
ফ্যামিলি ম্যান ৩: মনোজের ২২ কোটি, সহঅভিনেতাদের পারিশ্রমিক কত? Nov 14, 2025
img
লকডাউন নয়, ভাষণ শোনার জন্য রাস্তা ফাঁকা : মাসুদ কামাল Nov 14, 2025
img
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন আর নিরপেক্ষ নেই: তাহের Nov 14, 2025
img
পর্দায় আসতে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর মায়ের বায়পিক Nov 14, 2025
img
শোয়েব মালিকের সাথে বিচ্ছেদের পর প্যানিক অ্যাটাকে ভুগতেন সানিয়া মির্জা Nov 14, 2025