আগামী ১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হোম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এটি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরির জন্য বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম ম্যাচ হিসেবে বিবেচিত। এ কারণে ম্যাচটি জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজন করতে চায় বাফুফে। এজন্য তারা একদিকে মাঠের প্রস্তুতি কাজ শুরু করেছে, অন্যদিকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে বাকি কাজ দ্রুত শেষ করার অনুরোধ জানিয়ে যাচ্ছে।
২০২০ সালের নভেম্বরের পর জাতীয় স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় না। প্রায় সাড়ে চার বছর পর আবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ হতে যাচ্ছে। সংস্কারাধীন স্টেডিয়াম এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন পর্যবেক্ষণ করে। এরই অংশ হিসেবে আজ এএফসির ভুটানী ম্যাচ কমিশনার মিন্দু দর্জি ঢাকায় এসে স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন।
দুপুরের দিকে ড্রেসিংরুম, মাঠ ঘুরে দেখেন। সন্ধ্যার পর আসেন ফ্লাডলাইট, জায়ান্ট স্ক্রিন, মিডিয়া ট্রিবিউন দেখতে। এএফসি প্রতিনিধির পর্যবেক্ষণের সময় বাফুফে ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা ছিলেন। এএফসি প্রতিনিধির চোখে অসম্পন্ন বিষয়গুলো চোখে পড়েছে। কবে নাগাদ কোনটির কাজ শেষ হবে সেটার নিশ্চয়তা চেয়েছেন বাফুফের কাছে।
এনএসসির প্রতিনিধিবর্গ ড্রেসিংরুম, ম্যাচ কমিশনার, ডোপ টেস্ট, ফ্লাডলাইট সহ বিভিন্ন বিষয় ধরে ধরে কাজ সমাপ্তের ভিন্ন ভিন্ন ডেডলাইন দিয়েছেন। আগামী পরশু দিন জাতীয় স্টেডিয়ামে সংস্কার কাজ পাওয়া সকল ঠিকাদারদের ডেকেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। পরশু বৈঠকে বাফুফে সাধারণ সম্পাদককেও আহ্বান করা হয়েছে। বাফুফের চাহিদা, কাজের বর্তমান অবস্থা ও ডেডলাইন নিয়ে তাগাদা প্রদান করবে এনএসসি।
বাফুফের নির্বাহী সদস্য কামরুল হাসান হিলটন বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে মাঠের কাজ শুরু করেছি। ২২ মে’র মধ্যে স্টেডিয়ামের সামগ্রিক কাজ সম্পন্ন করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এর আগে ১০ মে টাওয়ারের ফ্লাডলাইট আমাদের বুঝিয়ে দেয়ার কথা বলেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ড্রেসিংরুমে এসি, ডোপ টেস্ট রুম বড় করা আরো কিছু কাজ রয়েছে যা কোনোটি এক সপ্তাহ আবার কোনোটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে।'
ফ্লাডলাইট টাওয়ারের পাশাপাশি গ্যালারীর শেডেও স্থাপিত হবে। টাওয়ারে সকল লাইট ভার বহন করতে পারবে না এজন্য বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী গ্যালারী শেডে কিছু লাইট বসবে। লাইট বিদেশ থেকে ঢাকায় আসলেও বিশেষজ্ঞ মতামতের নির্দেশনার জন্য স্থাপিতের কাজ শুরু হয়েছে বিলম্বে। এরপরও ফ্লাডলাইটের কাজ জুনের আগেই শেষ করার ঘোষণা ছিল। এখন ১০ জুন বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে পুরোপুরি বসানোর নিশ্চয়তা দিতে পারেননি এনএসসি'র প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা। জুনের মধ্যে তারা এটি শেষ করতে চেয়েছে। শুধু টাওয়ারের লাইট দিয়ে ১৬০০-১৮০০ লাক্স আলো আশা করছে এনএসসি প্রকৌশল বিভাগ। যেটা ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার জন্য বাফুফে যথেষ্ট মনে করলেও টেলিভিশনে উন্নত মানের সম্প্রচারের জন্য অবশ্য শঙ্কার।
বাফুফে চট্টগ্রামে অনুর্ধ্ব ২০ বয়স ভিত্তিক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায়। এজন্য আগামী পরশু দিন চট্টগ্রাম যাচ্ছেন এএফসি প্রতিনিধি। তার পর্যবেক্ষণ ও মতামতের উপর মূলত স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের বিষয়টি নির্ভর করছে। আজ জাতীয় স্টেডিয়াম পরিদর্শনে জায়ান্ট স্ক্রিন, প্রেসবক্সের প্রশংসা করেছেন এএফসি প্রতিনিধি। আধুনিক ফুটবলে ড্রেসিংরুম স্টেডিয়ামের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে। জাতীয় স্টেডিয়ামে ড্রেসিংরুম এক গোল পোস্টের পেছনে। সেটা বিগত ২০ বছরের মতো পুরনো ধারণাই লেগেছে ম্যাচ কমিশনারের কাছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনে মাঠ ও ফ্লাডলাইটের ব্যাপারে ফেডারেশনকে বেশি গুরুত্বারোপ করেছেন ভুটানী মিন্দু।
আরএ