দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা আকাশপথে যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু করার বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে চিরবৈরী দুই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও চীন। প্রতিবেশি দুই দেশের মাঝে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল চালুর বিষয়ে এক দফার আলোচনাও হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আকাশপথে যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।
সোমবার নয়াদিল্লির সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সীমান্তে প্রাণঘাতী এক সংঘর্ষের পাঁচ বছর পর প্রতিবেশি দুই দেশ ভারত-চীনের সম্পর্কে বফর গলতে শুরু করেছে। উভয় দেশের মাঝে সরাসরি যাত্রীবাহী বিমান চলাচল শুরুর বিষয়ে আলোচনা করেছে নয়াদিল্লি-বেইজিং।
গত জানুয়ারিতে বাণিজ্য ও অর্থনীতি নিয়ে পারস্পরিক বিবাদের সমাধানে কাজ করতে রাজি হয় প্রতিবেশি এ দুই দেশ। বেইজিং-দিল্লির এমন পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক বিমান খাতকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে চীনের বিমান চলাচলে ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা যেতে পারে। কারণ করোনাভাইরাস মহামারির সময়ের পর থেকে আকাশপথে যাত্রী পরিবহনে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে চীন।
নয়াদিল্লির ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের আয়োজিত এক সম্মেলনে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সেক্রেটারি ভামলুনমং ভুয়ালনাম বলেছেন, ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চীনের বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের এক দফা বৈঠক হয়েছে। উভয়পক্ষের মাঝে এখনও এমন কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে, যেগুলো সমাধানের কাজ চলছে।
তবে এই মতপার্থক্যের বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনও তথ্য দেননি তিনি। ২০২০ সালে হিমালয় লাগোয়া সীমান্তে ভারত-চীনের সেনাবাহিনীর মাঝে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সীমান্তের এই সংঘর্ষে ভারতীয় কমপক্ষে ২০ সৈন্য ও চীনের সামরিক বাহিনীর চার সদস্য নিহত হন। এই ঘটনার পর দুই দেশের সম্পর্কে ব্যাপক অবনিত ঘটে।
সীমান্ত সংঘাতের এই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে উভয় দেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক খাতেও। পরে ভারতে বিনিয়োগকারী চীনা বিভিন্ন সংস্থার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ, শত শত জনপ্রিয় অ্যাপস নিষিদ্ধ ও আকাশপথে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে নয়াদিল্লি। তবে দুই দেশের মাঝে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
পার্বত্য অঞ্চলের সীমান্ত এলাকায় সামরিক অচলাবস্থার অবসানে গত বছরের অক্টোবরে ভারত ও চীনের মাঝে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই চুক্তির পর থেকে উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটেছে। একই মাসে রাশিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাঝে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এফপি/টিএ