যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ ঘোষণার প্রতিশোধমূলক পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীন আগেই দেশটিতে তাদের যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল। তালিকা নিয়ন্ত্রণ জারির পর সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তাদের মাটির বিরল উপাদান রপ্তানির চালান আটকে দিয়েছে। তিনটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে যুক্তরাজ্যের অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইউনিল্যাড এই তথ্য দিয়েছে।
গত ২ এপ্রিল ‘লিবারেশন ডে’ ঘোষণা হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু দেশের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেন। সিরিজ শুল্কারোপের এই ধারায় সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়ে চীন। শুল্ক আরোপের এই ‘টেবিল টেনিস খেলার’ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দেয়। চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
চীন জানায় যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপ অস্বাভাবিক এবং তা আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও বাণিজ্য আইনের পরিপন্থি। তারা আরও বলে এর মাধ্যমে চীনের ওপর প্রচণ্ডভাবে বলপ্রয়োগ করা হচ্ছে যা এক ধরনের ‘গুন্ডামি’।
আর এসব কারণেই গত ১১ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে চীন। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিরল মাটির বেশ কিছু উপাদান রপ্তানি আটকে দেয় দেশটি। চীনের এসব রপতানিযোগ্য উপাদান যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা, বৈদ্যুতিক গাড়ি, জ্বালানি ও ইলেকট্রনিক শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়। বিশ্বে মাটির এই জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর মোট উৎপাদনের ৯০ শতাংশই সরবরাহ করে চীন।
চীন প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বিরল মাটির সাতটি উপাদান রপ্তানি আটকে দিয়েছে । এসব উপাদানগুলো হলো-সামারিয়াম, গাডোলিনিয়াম, টারবিয়াম, ডাইস্পোরোসিয়াম, লুটেটিয়াম, স্ক্যান্ডিয়াম এবং ইট্রিয়াম।
এ বিষয়ে চীনের একজন বিরল মাটির ব্যবসায়ীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তাদের সরবরাহ করা চালান যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে ৬০ দিনের বেশি সময় লাগবে। তবে সত্যিকারভাবে এক্ষেত্রে সময় লাগতে পারে আরও বেশি। কেননা চীন থেকে পণ্য রপ্তানি করতে এখন রপ্তানিকারকদের দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স নিতে হচ্ছে। আর এই লাইসেন্স পেতে ছয় থেকে সাত সপ্তাহ বা কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে।
এমআর/টিএ