বাংলা ছবিতে বহু যুগ পরে শতাব্দী রায়। তিনি বড় পর্দায় ফিরছেন পরিচালক মৈনাক ভৌমিকের হাত ধরে। তাঁর ‘বাৎসরিক’ ছবিতে। এই খবর যখন তিনি ঘোষণা করেছিলেন তখন চমকেছিল টলিউড। পয়লা বৈশাখের দিন সাংসদ-অভিনেত্রী এবং ঋতাভরী চক্রবর্তীর ‘লুক’ আনন্দবাজার ডট কমে প্রথম প্রকাশিত। ছবির শুটিং শেষ। মৈনাক বললেন, “শুটিংয়ের ধারা বদলেছে। ভেবেছিলাম, শতাব্দীদি পারবেন না। ওঁর পরিশ্রম দেখে আমরা চমকে গিয়েছি!”
তাঁর মতে, আগে এক মাস ধরে একটি ছবির শুটিং হত। এখন বড়জোর ১৫ দিন। আগে শুটিংয়ের মাঝে অবসর মিলত। এখন পরস্পরের দিকে চোখ তুলে তাকানোর অবসর পান না অভিনেতারা! পরিচালকের তাই মনে হয়েছিল, এই বদলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কষ্ট হবে শতাব্দীর। শুটিং করতে গিয়ে দেখলেন, দীর্ঘ দিন অভিনয় না করায় সাংসদ-অভিনেত্রীর মধ্যে অভিনয়ের খিদে আরও বেড়েছে। ফলে, অনায়াসে তিনি সব রকম পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন। শতাব্দী কাউকে কোনও অনুযোগ জানানোর সুযোগই নাকি দেননি।
মৈনাককে এখনও নাকি প্রযোজকেরা অনুরোধ করেন, ‘আমার গার্লফ্রেন্ড’ কিংবা ‘মাছ মিষ্টি মোর’-এর সিক্যুয়েল বানান। কারণ, শহুরে সম্পর্কের গল্প প্রথম তাঁর ছবি দিয়েই কলকাতা দেখেছিল। তিনি কি প্রযোজকদের অনুরোধ রাখছেন? ‘বাৎসরিক’ ছবির গল্প বলছে, মৈনাক কথা শুনছেন না! তিনি হাড়হিম করা ভূতের গল্প আনতে চলেছেন। যেখানে স্বামীর মৃত্যুর পর একা হয়ে যাওয়া স্ত্রী এবং তার ননদ ভাবছে, বাড়িটি তারা রাখবে না বিক্রি করে দেবে? কারণ, এক জনের মৃত্যু বাড়িটিতে যেন কালো ছায়া ফেলেছে। ভাই, ভাইয়ের বৌ আর ননদের ভূমিকায় যথাক্রমে ঈশান মজুমদার, ঋতাভরী, শতাব্দী। দক্ষিণ কলকাতার একটি বাড়িতে সিংহভাগ শুটিং করেছেন পরিচালক।
কেন পরিচালকদের আবদার রাখছেন না? প্রশ্নের জবাবে মৈনাকের যুক্তি, “সম্পর্কের গল্প এখানেও আছে। ননদ-ভাইয়ের বৌয়ের পারস্পরিক সম্পর্কে উঠে আসবে ছবিতে। ভূত তো এখানে প্রতীক বা রূপক। অতীতকেও তো আমরা ভূত বলি।” আরও যোগ করেছেন, তিনি যখন ‘আমরা’ ছবিটি এনেছিলেন, শহুরে দর্শকেরা মুখে ফিরিয়েছিলেন। তাঁদের মত, এই ধরনের ছবি কে দেখবে? ‘বেডরুম’ হিট হওয়ার পর মৈনাকের শহুরে সম্পর্কের গল্প সিনেপ্রেমীদের মুখে মুখে ফিরত। যে কারণে আজও তাঁর থেকে প্রযোজকেরা সম্পর্কের গল্পের সিক্যুয়েল চান। এই জায়গা থেকেই পরিচালকের বক্তব্য, “বাংলা ছবিতে হাড়হিম করা ভূতের গল্প নেই-ই। ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ বা ‘গয়নার বাক্স’ হরর কমেডি ঘরানার ছবি। আমিই না হয় নতুন করে আবার শুরু করলাম।” মৈনাকের মতো ভূতের গল্প পছন্দ করেন ঋতাভরীও। ‘গৃহস্থ’-এর পর তাই ঋতাভরী-মৈনাক জুটি এই ছবিতেও। ছবিমুক্তি ৬ জুন।
এসএন