ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দ্বিতীয় দফার পরোক্ষ আলোচনা শেষে উভয় পক্ষই অগ্রগতির কথা জানিয়েছে। শুক্রবার ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি তা ‘গঠনমূলক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং জানান, ২৬ এপ্রিল ওমানে তৃতীয় দফার বৈঠক হবে। এর আগে কয়েকদিন ধরে প্রযুক্তিগত পর্যায়ের বৈঠক হবে, যা ইতিবাচক অগ্রগতির ইঙ্গিত বহন করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এপিকে বলেন, “বৈঠকে খুব ভালো অগ্রগতি হয়েছে” এবং পরবর্তী বৈঠক নিশ্চিত করা হয়েছে। চার ঘণ্টার এই আলোচনায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা আলাদা কক্ষে অবস্থান করেন, এবং ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আল-বাসায়েদি তাদের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান করেন।
আরাঘচি জানিয়েছেন, "আমরা কিছু মূলনীতি ও লক্ষ্য সম্পর্কে ভালো সমঝোতায় পৌঁছেছি। আলোচনার পরিবেশ ছিল গঠনমূলক এবং অগ্রগতি হচ্ছে।" আলজাজিরার প্রতিবেদকও জানিয়েছেন, এই দফায় আলোচনা কিছুটা গতি পেয়েছে এবং ইরান পক্ষ থেকে ইতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে।
এখন এই আলোচনা এমন এক সময়ে চলছে যখন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রসি সতর্ক করেছেন যে, ইরান পরমাণু অস্ত্র অর্জন থেকে খুব বেশি দূরে নয়। তবে, ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর একটি বড় অংশ মনে করে, ইরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গিয়ে আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরে আসেন এবং মার্চ মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার কাছে নতুন করে আলোচনার প্রস্তাব দেন, যদিও এতে সামরিক হুমকিও ছিল।
আলোচনার মূল দ্বন্দ্ব এখনও রয়েছে: ইরান কি একটি বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচি চালু রাখতে পারবে, নাকি পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে? যুক্তরাষ্ট্রের কট্টরপন্থীরা দ্বিতীয় অবস্থানকে সমর্থন করছে।
তৃতীয় দফার আলোচনা ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এসএস/এসএন