ঈদের সিনেমার জয়জয়কার চলছে সর্বত্র। এবার রোজা ঈদে মুক্তি পেয়েছে ৬টি সিনেমা। সবগুলো সিনেমাই ধুম ধারাক্কা ব্যবসা করতে সমর্থ হয়েছে। পাচ্ছে প্রশংসাও। দেশ মাতিয়ে ছবিগুলো বিদেশের মাটিতে পা রেখেছে। ইউরোপ-আমেরিকার নানা শহরে সিনেমাগুলো খুব ভালো সাড়া ফেলেছে। এই চিত্রে খুশির বান ঢেকেছে সিনেমাপাড়ায়।
এবার ঈদের সিনেমা নিয়ে নিজের আনন্দের কথা জানালেন বরেণ্য অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। তিনি ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে সুপারস্টার শাকিব খানের প্রশংসা করেছেন। আফরান নিশোর অভিনয়েও মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করছেন সিনেমার হারানো সাম্রাজ্য ফিরে এসেছে।
আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘সারা বিশ্বে সিনেমার রূপান্তর ঘটছে। চলচ্চিত্র দিয়ে দেশের পরিচিতি তৈরি হয়। দেশের নাম ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বব্যাপী। দেশ অন্য দেশের মানুষের কাছ থেকে সমীহ পেতে পারে- আর আমরা সিনেমা দেখা, বানানো ছেড়ে দিলাম। আমাদের ঝলমলে সিনেমাজগৎটা অন্ধকারে ডুবে গেলো।’
তিনি স্ট্যাটাসে আরও বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে- ঈদের পর থেকে আজ অবধি যেখানেই যাই এই সিনেমাগুলো নিয়ে চর্চা হতে দেখি। এটা হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার মতো। ঈদের আনন্দের সাথে বহুকাল পরে আবার সিনেমার আনন্দ যুক্ত হয়েছে। এ যেনো হারিয়ে পাওয়া। সিনেমা তো এক ধরণের স্বপ্ন রচনা। স্বপ্ন বড় হতে থাকলে মানুষও বড় হবে। তারকা সিনেমার চেহারা বদলে দিতে পারে। সিনেমাও বদলে দিতে পারে তারকাকে। শাকিব খান তার উদাহরণ। এই তারকা প্রথমে নিজের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তারপর ক্রমাগত বদলে দিচ্ছেন তার সিনেমাগুলোকে।’
এই নির্মাতা ও অভিনেতা বলেন, দেশটায় আরও কয়েকজন সাহসী পরিচালক থাকলে মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম, নিশোরা আমাদের চলচ্চিত্রের মহা আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারতেন। সিনেমার চেহারায় দারুণ পরিবর্তন নিশ্চয়ই আসতে পারতো।
আফজাল হোসেন ‘দাগি’ সিনেমাটি দেখেছেন জানিয়ে লিখেছেন, ‘শিহাব শাহীনকে অতি চমৎকার নির্মাতা হিসাবে জানি, তাই আগ্রহ নিয়ে দাগি দেখতে যাই। নিশোকে নিয়ে বহু মহলে আলোচনা শুনি- সেজন্যেও বন্ধুবান্ধব ঠিক করে দাগি দেখবে। একসাথে গিয়েছিলাম নয়জন। সবাইকে মুগ্ধ করতে পেরেছে দাগি। হল থেকে বেরিয়ে দলেবলে রেস্তোরাঁয় খেতে গেছি, এ পুরো সময়টা দাগি নিয়ে অসংখ্য রকমের কথা হয়েছে। আমার খুব ভালো লেগেছে। আবার আগের মতোই আমাদের দেশে তৈরি একটা সিনেমা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ সবাই হৈহৈ রৈরৈ আলাপ করেছি।
শিহাব শাহীন মুগ্ধ করেছে তার নির্মাণের মুন্সিয়ানা দিয়ে। গল্পটা এক বৈচিত্র থেকে আর এক বৈচিত্রে দৌঁড়ায়, থামে না। দৌঁড়াতেই থাকে। কি হবে এরপর, এই কৌতুহল সারাক্ষণ টিকিয়ে রাখতে পারা খুবই কঠিন কিন্তু সহজেই তা পেরেছেন শিহাব শাহীন। নিশো চমকে দেওয়ার মতো সুবাতাস। এত বড় একটা চলচ্চিত্রের ভার কাঁধে নিয়ে দর্শকমনে বিশ্বস্ততা ধরে রেখে দৌঁড়ে চলা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। সিনেমার পর্দাটা অনেক বড়, সেই পর্দা জুড়ে সারাক্ষণ বড় হয়ে জুড়ে যে থাকতে পারে- সেই নায়ক।’
সবশেষে নিজেকে সিনেমা পাগল উল্লেখ করে আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি আমাদেরকালে সিনেমা পাগল ছিলাম। বয়স বেড়েছে কিন্তু একের পর এক ভালো সিনেমা হতে থাকলে যৌবনের আনন্দ আবার ফিরে পেতে পারি, মনে হয়েছে। নতুন নতুন সিনেমা ঘর হোক, মানুষ সিনেমা দেখুক। নানারকম গল্পের চর্চায় মানুষ নিত্য নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারুক। এ চাওয়া বাড়াবাড়ি রকমের নয়।’
এসএন