ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযানে নেমেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যামূলক হামলার প্রতিবাদে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। খবর মেহের নিউজের।
বিবৃতিতে সারি বলেন, ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট ইসরায়েলের নেভাতিম বিমানঘাঁটিতে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। উল্লেখ্য, এই বিমানঘাঁটি নেগেভ মরুভূমির উত্তরে, বিয়ারশেবা শহরের প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।
তিনি জানান, এ হামলায় ‘প্যালেস্টাইন-২’ নামের ইয়েমেনের নিজস্ব উন্নয়নকৃত হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয় এবং ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়।
ইয়াহিয়া সারি বলেন, গাজার নির্যাতিত জনগণের প্রতি সমর্থন, ইসরায়েলের নৃশংসতার প্রতিবাদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের জবাবে ইয়েমেনি সেনাবাহিনী ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ইয়েমেনি বাহিনী তাদের সামরিক সক্ষমতা উন্নত করতে থাকবে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন আরও জোরালো করবে।
সারি সাফ জানিয়ে দেন, যতক্ষণ না গাজায় ইসরায়েলের স্থল ও বিমান হামলা বন্ধ হচ্ছে এবং পুরোপুরি অবরোধ তুলে নেওয়া হচ্ছে, ততদিন ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখবে।
ইসরায়েলি আগ্রাসন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ইয়েমেনবিরোধী সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়ায়, ইয়েমেনি বাহিনী এরই মধ্যে লোহিত সাগর ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ইসরায়েলি, মার্কিন এবং ব্রিটিশ স্বার্থের ওপর ধারাবাহিক হামলা শুরু করেছে।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ যখন তীব্রতর হয়, তখন ইয়েমেন কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথগুলো অবরোধ করে, যাতে ইসরায়েলে সামরিক সহায়তা পৌঁছানো বাধাগ্রস্ত হয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজার ভয়াবহ মানবিক সংকটের প্রতি মনোযোগ দেয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো ‘আল আকসা ঝড়’ নামে আকস্মিক হামলা চালানোর পর ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু করে। সেই সময় থেকেই ইয়েমেন ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়ে আসছে।
ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী বারবার জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তির সংগ্রামের পাশে রয়েছে এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাবে সামরিক প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে।
এসএম/এসএন