মালয়েশিয়ায় ১৭ হাজার ৭৭৭ শ্রমিকের যেতে না পারার দায় রিক্রুটিং এজেন্সির

১৭ হাজার ৭৭৭ জনের মালোয়েশিয়ায় যেতে না পারার দায় রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মর্মে হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

রোববার (২৭ এপ্রিল) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

পরে রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও যেতে না পারাদের টাকা ফেরত দেওয়া এবং তাদের মালোয়েশিয়ায় যাওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি ২৭ আগস্টের মধ্যে জানাতে বলেছেন উচ্চ আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. তানভীর আহমেদ।

এর আগে গত বছরের ২৪ জুন মালয়েশিয়া শ্রমিক পাঠানো কাণ্ডে ভিকটিমের জীবন ধ্বংসের জন্য কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা এবং খামখেয়ালিপনাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেন মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৭৭৭৭ শ্রমিকের টাকা সুদসহ ফেরত দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষকে প্রতি তিন মাস পর পর উক্ত ঘটনায় আপডেট রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে পক্ষে শুনানি করেন মো: তানভীর আহমেদ এবং বিপ্লব কুমার পোদ্দার।

এর আগে মালয়েশিয়ায় কর্মী না যাওয়ার ঘটনায় কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা সাত দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলো হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী রাষ্ট্রপক্ষ একটি প্রতিবেদন গতকাল আদালতে দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীদের নিকট হতে গ্রহণকৃত সমুদয় অর্থ ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ফেরত প্রদান করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া কর্মী প্রেরণে ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রিক্রুটিং এজেন্সি কর্তৃক মন্ত্রণালয় নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের প্রাপ্ত অভিযোগসমূহের আইনানুগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারণ করা হলে নির্ধারিত সময়সীমার সাথে সংগতি রেখে চাহিদাপত্র ও ভিসা ইস্যুর তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করা দরকার। যাতে চাহিদাপত্র ইস্যু থেকে কর্মীর বিদেশ গমন ও পরবর্তী পরিস্থিতি তদারকি করা যায়। এই সিস্টেমে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসমূহ এবং রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহ সংযুক্ত থাকতে পারে। মন্ত্রণালয় হতে নিয়োগানুমতি গ্রহণের পর বিএমইটি’র ক্লিয়ারেন্স কার্ড গ্রহণ এবং কর্মী প্রেরণের বিষয়টি নির্দিষ্টকরণ করা। রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহ কর্তৃক অভিবাসী কর্মীদের নিকট থেকে অভিবাসন ব্যয় গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং ই-ভিসা প্রাপ্ত যে সকল কর্মী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেননি, তাদের বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক সে দেশের সরকারের সাথে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখা।

আদালতে রিটকারী পক্ষে আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় শুনানি করেন। 

আরএম/এসএন 


Share this news on:

সর্বশেষ

img
লামিয়ার শোকাহত পরিবারের পাশে তারেক রহমান Apr 27, 2025
img
২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিন ডিগ্রি তাপমাত্রা কমতে পারে Apr 27, 2025
img
সহ-অভিনেতাকে চড়! মর্যাদার প্রশ্নে কখনও আপস করেননি মৌসুমী Apr 27, 2025
img
বর্তমান শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন : আলী রীয়াজ Apr 27, 2025
img
পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ Apr 27, 2025
img
মসজিদে শিশু ধর্ষণ, মুয়াজ্জিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড Apr 27, 2025
img
‘সংস্কার প্রস্তাবের ঐকমত্যের বিষয়ের বাইরে সংস্কারের সুযোগ নেই’ Apr 27, 2025
img
আরাকানে স্বাধীন মুসলিম রাজ্য চায় জামায়াত Apr 27, 2025
ডিসেম্বর – জুনে জাতীয় সংসদ নয়, গনপরিষদ নির্বাচন চান সামান্তা Apr 27, 2025
img
ভারতের পানি বন্ধ করার হুমকিতে পাকিস্তানে আতঙ্ক Apr 27, 2025