নতুন কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির তিন সংগঠনের

তরুণ সমাজকে আগামী জাতীয় নির্বাচন ও ভোটের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির তিন অঙ্গসহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। সোমবার (২৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দেশব্যাপী তারুণ্যের সমাবেশের এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অভূতপূর্ব ও জনসম্পৃক্ত নির্দেশনায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে ৪টি বৃহত্তর বিভাগে ভাগ করে একটি সমন্বিত ও গতিশীল কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

তরুণদের ক্ষমতায়ণ, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ, সৃজনশীলতার বিকাশ, এবং তৃণমূল পর্যায়ে সার্বজনীন উন্নয়নের বাস্তবসম্মত মডেল গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, প্রতিটি বিভাগ দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি আয়োজন করতে হচ্ছে। প্রথম দিনে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, যার শিরোনাম ‘তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ।’

এই সেমিনারে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে, গণতন্ত্রকামী সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, উদীয়মান চিন্তাবিদ, তরুণ বক্তা ও উদ্যোক্তারা অংশ নেবেন। আলোচনায় উঠে আসবে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, নগরায়ণ, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকার, এবং তারুণ্যের ক্ষমতায়নে একটি আধুনিক, মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ নির্মাণ।

এই প্ল্যাটফর্ম হবে একটি উন্মুক্ত ও যুক্তিনির্ভর সংলাপের ক্ষেত্র, যেখানে মতবিনিময় হবে গঠনমূলক, পর্যালোচনামূলক এবং ভবিষ্যৎমুখী। সংলাপের ভিত্তি হবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলসমূহ ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা, এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান প্রদত্ত দিকনির্দেশনা ও রাজনৈতিক দর্শন।

এরপর কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে, যার উদ্দেশ্য একটি প্রাণবন্ত, উদ্দীপনাময় পরিবেশে তরুণদের সরব উপস্থিতি তথা ঐক্য, প্রত্যয় ও আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ নিশ্চিত করা। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে যেন আর কখনো কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে, ফ্যাসিবাদের ১৬ বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জুলাই-আগস্টের গণহত্যার যেন দ্রুত বিচার নিশ্চিত হয়, সার্বভৌম বাংলাদেশে যেন গণমানুষের স্বাধীনচেতা আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ঘটে, সাম্য ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের যেন পরিবর্তন ঘটে — সেটিই লক্ষ্য।

এসময় চারটি কর্মসূচির সময়সূচি ও বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়। চারটি কর্মসূচি বিষয়বস্তু:

প্রথম কর্মসূচি: চট্টগ্রাম
তারিখ: ৯–১০ মে ২০২৫
বিভাগ: চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা

সেমিনার (৯ মে): কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা

সমাবেশ (১০ মে): তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

দ্বিতীয় কর্মসূচি: খুলনা
তারিখ: ১৬–১৭ মে ২০২৫
বিভাগ: খুলনা ও বরিশাল

সেমিনার (১৬ মে): শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা

সমাবেশ (১৭ মে): তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

তৃতীয় কর্মসূচি: বগুড়া
তারিখ: ২৩–২৪ মে ২০২৫
বিভাগ: রাজশাহী ও রংপুর

সেমিনার (২৩ মে): কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা

সমাবেশ (২৪ মে): তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

চতুর্থ কর্মসূচি: ঢাকা
তারিখ: ২৭–২৮ মে ২০২৫
বিভাগ: ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ

কর্মসূচি নিয়ে নেতারা আরো বলেন, এই কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে জনগণের মতামত ও চিন্তা-ভাবনা সংগ্রহ করা হবে, যার ভিত্তিতে আমরা আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক নীতিগুলোকে আরও জনকল্যাণমুখী ও মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পরিমার্জিত করতে পারব। তরুণদের একাগ্রতা, সম্পৃক্ততা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়াকে আরো জনমুখী ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ রাখার চেষ্টা করব।

আরআর/এসএন 

Share this news on: