এসডিএসের ৮০০ শতাংশ জমি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ!

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চারাবাড়ি এলাকায় সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এসডিএস)-এর ৮০০ শতক জমি জাল দলিলের মাধ্যমে দখল করার অভিযোগে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় এ জমির খাজনা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও আইনি লড়াই।

স্থানীয় সূত্র ও দাখিলকৃত আবেদনপত্র অনুযায়ী, শহরের দিঘুলিয়া এলাকার বাসিন্দা মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। তিনি নকল দলিল ব্যবহার করে জমি কিনেছেন বলে অভিযোগ, যার বিরুদ্ধে বর্তমানে জেলা জজ আদালতে দুটি মামলা চলমান রয়েছে।

এসডিএস গ্রুপের ইসলামিক রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রোপাইটর মো. ইসমাইল হোসেন সিরাজী ২৩ এপ্রিল জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া এক আবেদনে জানান, মোজাম্মেল হক তার প্রতিষ্ঠানের জমি জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, এসডিএস-এর মহাপরিচালক মো. নুরুল ইসলামের স্বাক্ষর ও পদবী জাল করে ওই জমি বিক্রির কাজ করা হয়েছে, যা নুরুল ইসলাম নিজেই ২০২০ সালে একটি লিখিত চিঠির মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, “এসডিএস-এর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিগতভাবে জমি বিক্রি বা হস্তান্তরের অনুমোদন নেই। প্রভাবশালী একটি মহল জাল দলিল বানিয়ে জমিটি দখল করেছে।”

ভূমি মন্ত্রণালয়ের আইন-৩ শাখার সহকারী সচিব শাহানা আক্তারের সই করা ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বরের একটি চিঠিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এ জমির খাজনা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে স্থানীয় ভূমি অফিস জানিয়েছে, জমির মালিকানা নিয়ে মামলা চলমান থাকায় তারা খাজনা গ্রহণে বিরত রয়েছে।

এ বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান সুমন বলেন, “যে সময় জমিটি রেজিস্ট্রি হয়েছে, তখন ইসমাইল হোসেন কারাগারে ছিলেন। প্রশ্ন হলো, জমির মালিক যদি কারাগারে থাকেন, তাহলে রেজিস্ট্রি হলো কীভাবে?”

তিনি আরও বলেন, “এই জমি বন্ধক রেখে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে লোনও নেওয়া আছে। লোন পরিশোধ না হলে জমি বিক্রি হওয়ার সুযোগ নেই।”

অভিযোগের বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, “আমি আইনগতভাবে জমি কিনেছি এবং দখলে আছি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও এখনো খাজনা জমা দিতে পারিনি।”

অন্যদিকে মো. ইসমাইল হোসেন সিরাজী বলেন, “জমি বিক্রি করে আমি গ্রাহকদের পাওনা শোধ করবো। তবে আদালতে মামলা চলমান থাকায় জমি জাল দলিলের ভিত্তিতে খাজনা না নেওয়ার অনুরোধ করেছি।”

টাঙ্গাইলে জমি দখল ও দলিল জালিয়াতির এই ঘটনা স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।


এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইরানের ‘শান্তিপূর্ণ’ পরমাণু কেন্দ্রে হামলা, মোদির সামনেই যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ব্রিকস Jul 07, 2025
img
সরকারি অফিসে কেন ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হবে?: তাসনিম জারা Jul 07, 2025
img
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন গিল Jul 07, 2025
img
মাস্কের আমেরিকা পার্টিকে ‘হাস্যকর’ বললেন ট্রাম্প Jul 07, 2025
img
দেশে মবের কোনো বিচার হচ্ছে না : মাসুদ কামাল Jul 07, 2025
img
ফের পাকিস্তানি তারকাদের নিয়ে কঠোর অবস্থানে ভারত Jul 07, 2025
img
৫ মাস পর জাতীয় নির্বাচন হবে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 07, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর কুয়েত সিটি, ঢাকার অবস্থান ২৬তম Jul 07, 2025
img
গাজা ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ গেল আরও ৮১ জনের Jul 07, 2025
img
দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় জনগণ ঐক্যবদ্ধ : মির্জা ফখরুল Jul 07, 2025
img
দুপুরের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 07, 2025
আ.লীগের নাম, তার ইতিহাস, তার অবদান ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়: রনি Jul 07, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Jul 07, 2025
সীমান্তে দাদাদের বাহাদুরির দিন শেষ মন্তব্য নাহিদের Jul 07, 2025
img
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২, নিখোঁজ ৪১ Jul 07, 2025
img
আজ ঢাকার যেসব এলাকায় ১১ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে Jul 07, 2025
‘সীমান্তে অনেক বাহাদুরি হয়েছে দাদাদের, সেই দিন শেষ’ Jul 07, 2025
img
‘আমরা আপনাদের নিরাশ করব না, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চাই’ সংবর্ধনায় ঋতুপর্ণা-আফঈদার প্রতিশ্রুতি Jul 07, 2025
img
নারী ফুটবলারদের সম্মানে মধ্যরাতে সংবর্ধনা দিল বাফুফে Jul 07, 2025
img
বিএনপির দুইপক্ষের অস্থিরতা, চিলমারীতে পুলিশের টহল জোরদার Jul 07, 2025