জয়পুরের মহারানির আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়ে ভিভের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা। প্রথম দর্শনেই প্রেম। খুব অল্প দিনেই সম্পর্ক গভীরতা পায়। নীনার গর্ভে আসে প্রথম সন্তান।
আশির দশক উত্তাল ছিল তাঁদের প্রেমে। একজন দাপুটে অভিনেত্রী, অন্যজন সাত সমুদ্র তেরো নদী পারের দুর্ধর্ষ ক্রিকেটার। ভারতের গ্ল্যামার দুনিয়ায় যতগুলি দুঃসাহসী প্রেমের আখ্যান রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম নীনা গুপ্ত ও ভিভিয়ান রিচার্ডের কাহিনি। দুঃসাহসী নীনা সমাজের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করেই জন্ম দিয়েছিলেন সন্তানের। কিন্তু সন্তানের বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। ভাল-মন্দে মেশানো সেই সম্পর্ককে আজও শ্রদ্ধা করেন অভিনেত্রী।
নীনার আত্মজীবনী ‘সচ কহু তো’ (সত্যি কথা বলি)-এ অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন তাঁর প্রেম, সন্তান আগমনের কথা। যেন এক রূপকথা। জয়পুরের মহারানির আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়ে ভিভের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা। প্রথম দর্শনেই প্রেম। তার আগের দিন অবশ্য খেলা দেখেছিলেন অভিনেত্রী। খুব অল্প দিনেই সম্পর্ক গভীরতা পায়। নীনার গর্ভে আসে প্রথম সন্তান। কিন্তু তত দিনে বিবাহিত ভিভ ফিরে গিয়েছেন নিজের দেশে। সেটা ১৯৮৯ সাল।
নীনা লিখেছেন, “অনেকেই আমাকে গর্ভপাতের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কেউ ভয় দেখিয়েছিলেন, একা মায়ের জীবন খুব সহজ হবে না। আমি ধৈর্য ধরে সকলের কথা শুনেছিলাম। সকলেই আমাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে আমি একা ভাবতে বসেছিলাম, ‘আমার কী মনে হচ্ছে? নিজের কাছে উত্তর পেয়েছিলাম, আমি আনন্দে উচ্ছ্বসিত’।”
কিন্তু একটা খটকা ছিল নীনার মনে। তিনি তো একা সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন না। ভিভ কী বলবেন, ভাবিত ছিলেন নীনা। তার পর এক দিন ফোন করে ফেললেন ভিন্ দেশী প্রেমিককে। অভিনেত্রী লিখেছেন, “আমি অন্তঃসত্ত্বা, সরাসরি বললাম। জিজ্ঞেস করলাম, আমি এই সন্তানকে জন্ম দিলে তোমার কোনও সমস্যা নেই তো?” ভিভের তরফ থেকে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছিলেন নীনা। তার পরই মাসাবার জন্ম। মেয়ের জন্মের পরও তাঁদের সুসম্পর্ক বজায় ছিল দীর্ঘ দিন।
নীনা আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “যতটা সম্ভব বাবার দায়িত্ব পালন করেছেন ভিভ। উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে আমাদের সম্পর্ক বেশ কিছু দিন স্থায়ী হয়েছিল। কিছু সুন্দর মুহূর্ত, কিছু কুৎসিত। এত দূর থেকে সম্পর্ক বজায় রাখা খুবই জটিল ছিল।”
২০০৮ সালে নীনা বিয়ে করেন বিবেক মেহরাকে। ২০২৩ সালে মাসাবার দ্বিতীয় বিয়ের সময় বিবেকের সঙ্গেই মেয়ের পাশে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে ভিভিয়ান রিচার্ডসকেও।
আরআর