সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে এনসিপির রাজনৈতিক অবস্থান ও দাবির পেছনের যুক্তি নিয়ে নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকটা পার্টিতে আলাদা আলাদা পলিটিক্স আছে। এনসিপির পলিটিক্সটা এটা যে তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চায়।’’
মাসুদ কামাল বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি আগস্টের পরে থেকে দাবিটা সবসময় আছে। এটা কখনোই মিলিয়ে গেছি বলে আমার কাছে মনে হয়নি। তবে আমি যে কথাটা শুরুতে বলেছিলাম, বিএনপির ক্ষেত্রে, এনসিপির ক্ষেত্রে আমি তাই বলব যে, এটা একটা পলিটিক্যাল পার্টি। একটা পলিটিক্যাল পার্টির পক্ষ থেকে একটা দাবি উঠতেই পারে। এটাই তাদের পলিটিক্স।"
তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকটা পার্টিতে আলাদা আলাদা পলিটিক্স আছে। তাদের পলিটিক্সটা এটা যে তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চায় এবং এই দাবিটা তারা ওরা তো আর করবে না। ওদের হাতে সে এখতিয়ার নাই। তো এ ক্ষমতাটা হল আপাতত গভমেন্টের কাছে চাচ্ছে।’’
তিনি জানান, ‘‘একটা পার্টি নিষিদ্ধ করার একাধিক পদ্ধতি আছে। একটা হল সরকার নিষিদ্ধ করতে পারে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে। আরেকটা হলো বিচার বিভাগ নিষিদ্ধ করতে পারে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো বিচার বিভাগের সামনে যদি উঠানো হয়, বিচার বিভাগের সে এখতিয়ার আছে বলে দিতে পারে। তৃতীয় একটা পদ্ধতি হলো জনগণ সে পার্টিটাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। জনগণ সে পার্টিকে কোন ভোট দিল না, জনগণ সে পার্টিকে মেনে নিল না। হতে পারে বাংলাদেশে অনেক এরকম পার্টি আছে, জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যত হওয়ার কারণে একদমই হারিয়ে গেছে। তাকে মানে, আপনার প্রশাসনিক অর্ডারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করতে হয়নি। পাওয়া যাবে না এখন, খুঁজে পাবেন না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন উনাদের পলিটিক্স এটা। এখন এই পলিটিক্সটা কিন্তু অনেকগুলো কারণ হয়। রাজনৈতিক দল যখন কোন একটা দাবি তুলে, তার পিছনে অনেকগুলি কাজ থাকে।
অনেকগুলি কারণ থাকে। হয়তো এই দাবিটা নিয়ে তারা রাজনীতি করতে করতে একসময় হয়তো মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে। মানুষ ভাবে যে না, একটা পপুলার একটা ইস্যুকে নিয়ে তারা সামনে আছে। এটাও একটা কারণ হতে পারে।’’
আওয়ামী লীগের অতীত অবস্থানের উদাহরণ টেনে মাসুদ কামাল বলেন, ‘‘যেমন আমরা দেখেছি যে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, আওয়ামী লীগ তো বেশ কয়েক দফা ক্ষমতায় ছিল।
আওয়ামী লীগ সবসময় কিন্তু দাবি করেছে জামাতকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা কিন্তু পপুলার ইস্যুটাকে আমি মনে করি তারা জিয়া রাখছে। তারা কিন্তু কখনো নিষিদ্ধ করছে না, কিন্তু শেষ মুহূর্তে, যখন সে মরে যায় আর কি, মৃত্যুর আগ মুহূর্তে এসে নিয়া নিষিদ্ধ করে দিয়ে গেছে। এর আগ পর্যন্ত তারা কখনোই কিন্তু নিষিদ্ধ করে নাই। এই অজুহাত সেই অজুহাত কেন তারা রাখছে? তারা মনে করছে, আমরা এই দাবিটা সবসময় তুলবো। তুলে তুলে আমার পক্ষে কিছু সমর্থন আমরা ম্যানেজ করব। বলা যায় না, এনসি তাও করতে পারে। যদি করে, আমি অবাক হবো না এবং করলে আমি এতে কোন ভুলও দেখি না। এটা পলিটিক্স।’’
আরএম/এসএন