সুন্দরবনে বিরল কচ্ছপ "বাটাগুর বাসকা" দিয়েছে ৬৫ বাচ্চা

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে মহাবিপন্ন কচ্ছপ প্রজাতি বাটাগুর বাসকার ৬৫টি বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। সোমবার (৫ মে) সকালে ৮২টি ডিম থেকে এই বাচ্চাগুলোর জন্ম হয়। এর আগে তিনটি মা কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরপাড়ে বালির নিচে ডিম পাড়ে। প্রায় ৬৫ দিন পর এসব ডিম থেকে বাচ্চাগুলো ফোটে।

বর্তমানে এগুলো বিশেষভাবে প্রস্তুত করা প্যানে রাখা হয়েছে।

করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত এখানে ৫২১টি ডিম থেকে ৪৭৫টি কচ্ছপের বাচ্চা জন্মেছে। এর আগে, গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রটিতে দুটি কচ্ছপ ৫৮টি ডিম পাড়ে, যেখান থেকে ৪২টি বাচ্চা জন্ম নেয়।

গবেষকদের ধারণা, ২০০০ সালের পর পৃথিবী থেকে বাটাগুর বাসকা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়।

২০০৮ সালে প্রকৃতিতে এই প্রজাতির অস্তিত্ব অনুসন্ধানে নেমে নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে আটটি কচ্ছপ পাওয়া যায়—যার মধ্যে চারটি পুরুষ ও চারটি স্ত্রী। পরে এগুলো সংরক্ষণ ও প্রজননের জন্য গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানকার পরিবেশে টিকতে না পারায় ২০১৪ সালে এসব কচ্ছপ এবং তাদের জন্ম দেওয়া ৯৪টি বাচ্চা সুন্দরবনের করমজল কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়।
আজাদ কবির বলেন, একসময় ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের নদী-নালায় এই কচ্ছপের দেখা মিলত।

শিকার ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে প্রজাতিটি বিলুপ্তপ্রায় হয়ে পড়ে। বর্তমানে করমজল কেন্দ্রে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫৮টি কচ্ছপ রয়েছে। এর মধ্যে ২২টির পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার যুক্ত করে সুন্দরবনের নদী ও সাগর মোহনায় অবমুক্ত করা হয়েছে, যাতে তাদের জীবনাচরণ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বাটাগুর বাসকা সাধারণত ১৭-১৮ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং এদের আয়ুষ্কাল ৪০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।

টিকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ