প্রমাণ থাকলে জুলাই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিচারে দেরি ঠিক হবে না : ইইউর রাষ্ট্রদূত



জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড অপরাধে অভিযুক্তদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দায়িত্ব বাংলাদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষের। অভিযুক্তদের বিষয়ে যদি সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে, তাহলে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর বিচার যখন শুরু হবে, তখন অকারণ দেরি করা ঠিক হবে না।

সোমবার (৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ডিক্যাব টকে এসব কথা বলেন ঢাকায় ইউরোপীয় জোটের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।

ইইউর রাষ্ট্রদূত বলেন, জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনকে সমর্থন করে ইইউ। জাতিসংঘ তাদের প্রতিবেদনে বিষয়গুলো খুব স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। পরবর্তী ধাপে যারা অপরাধে অভিযুক্ত তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দায়িত্ব বাংলাদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষের। তবে এক্ষেত্রে জবাবদিহিতা লাগবে।

মাইকেল মিলার বলেন, আমি যখন এখনকার পরিস্থিতি এবং পরবর্তী ধাপে রাজনৈতিক রূপান্তরের দিকে তাকাই, তখন কোনো ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করতে হলে সাক্ষ্যপ্রমাণ লাগবে। যদি সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে, তাহলে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর বিচার যখন শুরু হবে, তখন অকারণ দেরি করা ঠিক হবে না।

রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে এক প্রশ্নে আন্তঃসীমান্ত সহায়তা পাঠানোর জন্য সরকারগুলোর সম্মতি এবং মানুষের নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত মিলার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানবিক অংশীদার হিসেবে, শরণার্থীদের সহায়তার ক্ষেত্রে বাস্তববাদী থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। শরণার্থীরা এখানে থাকলে, আমরা তাদের প্রয়োজন এখানে মেটাব। তারা যদি সীমান্তের অপর প্রান্তে থাকে, তাহলে আমাদের দেখতে হবে কীভাবে ওই প্রান্তেও সহায়তা পাঠানো যায়। কেননা, এর মধ্য দিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি ভালো হতে পারে।

মিলার ব‌লেন, এটা আন্তঃসীমান্ত সহায়তাও হতে পারে। আমরা আন্তঃসীমান্ত সহায়তা পৃথিবীর নানা স্থানে করেছি এবং এটা কাজ করতে পারে। তবে, এটা কেবল তখনই কাজ করতে পারে, যখন দুই প্রান্তের মানুষগুলো নিরাপদ থাকে এবং সরকারগুলো একমত হয়।

অন্যান্য প্রসঙ্গ
ইইউর দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার সহযোগিতা চেয়েছে। এ বিষয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ইইউতে পাচার হওয়া অর্থ যদি বর্তমান সরকার ফেরত আনতে চায়, তবে এ নিয়ে রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যথাযথ তথ্য‍–উপাত্ত নিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখি যে পরিস্থিতি উন্নতির পথে আছে। আর বর্তমান পরিস্থিতি গ্রাউন্ড বাস্তবতা দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কার এখন বড় সুযোগ এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন মাইকেল মিলার। তিনি বলেন, এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। এ ছাড়া রাষ্ট্রদূত বাণিজ্য-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং প্লিড তৈরির জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন।

ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিনের সভাপতিত্বে ডিক্যাব টকে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।

আরএ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মানবাধিকার মিশন চালু জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন : প্রেস উইং Jul 19, 2025
img
নতুন কোনো গডফাদারের আবির্ভাব হতে দেব না : নাহিদ Jul 19, 2025
img
চিকিৎসার অভাবে না ফেরার দেশে জনপ্রিয় অভিনেতা Jul 19, 2025
img
মাত্র ২৪ বছর বয়সেই বলিউডে জাঁকজমকপূর্ণ অভিষেক শ্রীলিলার! Jul 19, 2025
img
যে কারণে ভারতের সাথে জোট বাঁধতে তৎপর চীন-রাশিয়া Jul 19, 2025
শ্রম অধিকার থেকে চীনা কাঁচামাল বর্জন, বাংলাদেশকে নতুন শর্তে বাঁধছে যুক্তরাষ্ট্র Jul 19, 2025
img
বিলম্ব না করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন : ফখরুল Jul 19, 2025
চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে কি বললেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা? Jul 19, 2025
img
বিশ্বের যেকোনো মাঠে বাংলাদেশ ভালো দল : পাকিস্তান অধিনায়ক Jul 19, 2025
img
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নির্মাতা রাকেশ রোশন Jul 19, 2025
img
‘কুবেরা’ প্রমাণ করলো, ভিন্ন গল্পেও আছে সাফল্য! Jul 19, 2025
img
দেশে মানবাধিকার মিশনের কাজ কী হবে, বিজ্ঞপ্তিতে জানাল সরকার Jul 19, 2025
img
শুটিংয়ে গুরুতর আহত শাহরুখ খান, নেওয়া হচ্ছে আমেরিকায় Jul 19, 2025
img
জামায়াতের সমাবেশটি হয়তো মিথ হয়ে থাকবে, অনেক গবেষণাও হবে: হান্নান মাসউদ Jul 19, 2025
যে দুটি আমল আপনার রিজিক বদলে দেবে Jul 19, 2025
জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে প্রাণ হারালেন আবু সাইদ Jul 19, 2025
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন নিয়ে যা বললেন হাসনাত আবদুল্লাহ Jul 19, 2025
img
ল্যাভেন্ডার বাগানে মোহময় রূপে ধরা দিলেন মেহজাবীন Jul 19, 2025
img
আগামী ১০ বছর প্রেমের বিষয়ে আমার কোনও আগ্রহ নেই: শ্রীলিলা Jul 19, 2025
img
কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশের মূল পর্ব শুরু Jul 19, 2025