৫০ শয্যার হাসপাতাল চালাচ্ছেন তিন চিকিৎসক, দুর্ভোগে রোগীরা

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর ভরসা করে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন গড়ে ১২০-১৩০ জন রোগী। অথচ মোট ১১টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে আছে ৮টি পদ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আউটডোরে ভিড় লেগেই আছে। কেউ এসেছেন জ্বর-সর্দি নিয়ে, কেউবা গর্ভকালীন জটিলতা বা শিশুদের অসুস্থতা নিয়ে। অপেক্ষা করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় সেবা পেতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। বাধ্য হয়ে কেউ ফিরে যাচ্ছেন বাড়ি, কেউ ছুটছেন জেলার অন্যান্য হাসপাতাল বা ব্যয়বহুল বেসরকারি ক্লিনিকে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে জনবল ঘাটতির কারণে। গরিব ও নিম্নআয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা এ হাসপাতাল হলেও নিয়মিত সেবা না পাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়ছেন তারা।

আগে সিজার করা হলেও, এখন সেটি বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কয়েকজন ব্যক্তি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গাইনি, শিশু, সার্জারি, মেডিসিন, এনেস্থেসিয়াসহ ১১টি পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র তিনজন চিকিৎসক। জুন মাসে আরও দুইজন বদলির অপেক্ষায় এবং বছরের শেষ দিকে অবসরে যাবেন কয়েকজন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। এ দুই শ্রেণিতে ৮২টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪২ জন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, তিনজন চিকিৎসক দিয়ে ইনডোর, আউটডোর ও ইমার্জেন্সি চালানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।

স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, প্রায়শ উপজেলার মানুষজন আমাদের কাছে এসে অভিযোগ করেন এই হাসপাতালের বিষয়ে। অথচ সমাধান নেই। চিকিৎসক সংকট দ্রুতই সমাধান করা উচিত।

এ প্রসঙ্গে কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মমিন উদ্দিন জানান, মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে পুরো হাসপাতাল চালানো প্রায় অসম্ভব। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দপ্তরে জানানো হয়েছে। তবে শুধু কামারখন্দ নয়, এ সংকট সারাদেশ জুড়ে বিদ্যমান বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সৌদি যুবরাজের সঙ্গে বৈঠকে ইরানের নিরাপত্তা প্রধান Sep 17, 2025
img
রাশিয়ার নেতৃত্বে সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ, ভারতসহ ৬ দেশ Sep 17, 2025
img
না বুঝে অনেক কাজ করে ফেলেছি : চমক Sep 17, 2025
img
আজ থেকে রেকর্ড দামে রুপা বিক্রি, ভরি কত ? Sep 17, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে জাপানি পণ্যের রপ্তানি কমেছে ১৪ শতাংশ Sep 17, 2025
img

তারেক রহমান

ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে Sep 17, 2025
img
সাকিবের ঝড়ো ক্যামিও বৃথা, পুরান ঝড়ে অ্যান্টিগার বিদায় Sep 17, 2025
img
ফ্লাইট বাতিলেও ভাঙেনি যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স অভিবাসন চুক্তি Sep 17, 2025
img
দুর্গাপূজা ঘিরে গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে : সাতক্ষীরার এসপি Sep 17, 2025
img
মাস্কের শতকোটি ডলার বিনিয়োগে লাফিয়ে বাড়ছে টেসলারের দাম Sep 17, 2025
img
চাকসু নির্বাচনে ২৭ হাজার ভোটারের বিপরীতে প্রার্থী ১০৮৮ Sep 17, 2025
img
সালমান-আমিরের উচ্চতা প্রসঙ্গে হৃতিকের কটাক্ষ Sep 17, 2025
img
এনসিপির জন্য প্রতিদিনই হতাশার খবর আসছে : মোস্তফা ফিরোজ Sep 17, 2025
img
জয়ে নির্ণায়ক ভূমিকা রাখা বোলারের প্রশংসায় তামিম Sep 17, 2025
img
বন্ধ মিটারেও বিদ্যুৎ বিল ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা! Sep 17, 2025
img
খুলনায় ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ১৭ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা Sep 17, 2025
img
প্রথমবারের মতো ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর অনুমতি দিলেন ট্রাম্প Sep 17, 2025
img
একীভূত হচ্ছে পাঁচটি ব্যাংক, অনুমোদন চূড়ান্ত Sep 17, 2025
img
সহকারী শিক্ষকদের কার্যক্রমে মাউশির নতুন নির্দেশনা Sep 17, 2025
img
জামালপুরের ইউএনও’র ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি, থানায় জিডি Sep 17, 2025