যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হতে চাইলে দক্ষ হতে হবে ইংরেজিতে

যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চাওয়া অভিবাসীদের জন্য এখন বাধ্যতামূলক হতে যাচ্ছে ইংরেজি ভাষার দক্ষতা। গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমান লেবার সরকারের আসন্ন অভিবাসন শ্বেতপত্রে এই প্রস্তাব আনতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার।

এতে বলা হয়েছে, ইংরেজিতে ‘জিসিএসই’ স্তরের সাধারণ দক্ষতা আর যথেষ্ট নয়। অভিবাসীদের এখন এ-লেভেল সমমানের ইংরেজি জানতে হবে, যাতে করে তারা সামাজিক, একাডেমিক এবং পেশাগত ক্ষেত্রে ‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে’ অনর্গল কথা বলতে পারেন। বর্তমানে বেশিরভাগ অভিবাসী পাঁচ বছর কাজ করার পর ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন’ বা স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে পারেন।

নতুন নীতিমালায় এই সময়সীমা বাড়িয়ে ১০ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া, শুধু ভাষা নয়, আর্থিক স্বচ্ছতা এবং ইউকে’র বাইরে অতিরিক্ত সময় কাটানোও ভবিষ্যতে স্থায়ী বসবাসের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে।
এই পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে লেবার সরকার তাদের নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অভিবাসন সংখ্যা কমাতে চাইছে।

অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি আরোপের আরো একটি রাজনৈতিক দিক আছে। তা হচ্ছে, ডানপন্থী দল রিফর্ম ইউকে’র নেতৃত্বে থাকা নাইজেল ফারাজ অভিবাসন ইস্যুতে ব্যাপক জনসমর্থন পাচ্ছে যা লেবার ও টোরি উভয় দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

সরকার বলছে, ‘যদি কেউ যুক্তরাজ্যে আসতে চান, তাহলে তাকে অবদান রাখতে হবে এবং সমাজে মিশে যেতে হবে।’

এজন্য অভিবাসীদের ব্রিটিশ মূল্যবোধ যেমন, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় সহনশীলতা বিশ্বাসের প্রমাণ দিতে হতে পারে। যদিও এই বিষয়ে পরীক্ষার পদ্ধতি এখনো স্পষ্ট নয়।

অভিবাসন নীতির এই পরিবর্তনের আওতায় বিদেশি শিক্ষার্থীরাও আসছেন কড়া নিয়মে। পড়াশোনা শেষে দুই বছর থাকার অনুমতি এখন নির্ভর করবে তারা ব্রিটেনে গ্র্যাজুয়েট-লেভেলের কাজ পান কি না, তার ওপর।
অর্থনীতি ও শিল্পক্ষেত্রে বিদেশি শ্রমের ওপর নির্ভরতা কমাতে, অভ্যন্তরীণ শ্রমশক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে ব্রিটেন সরকার। যারা ন্যূনতম মজুরি না দিয়ে আইন লঙ্ঘন করে তাদের বিদেশি কর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ারও পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

লেবার সরকারের নতুন অভিবাসন পরিকল্পনায় কঠোর শর্ত আরোপের ফলে অভিবাসীদের জন্য যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়া আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে। ইংরেজিতে সাবলীল না হলে বা আর্থিকভাবে স্থিতিশীল না হলে, স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়া কঠিন হবে।

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যতদিন ইনসাফ কায়েম না হবে ততদিন সংগ্রাম চলবে : সাদিক কায়েম Nov 21, 2025
img
বিএনপি চেয়ারপারসন ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সৌজন্য সাক্ষাৎ Nov 21, 2025
অভিষেক জুটিতে অজি দলে চমক Nov 21, 2025
জনতার ঢল গাজীপুরে—হুমায়ুন কবির খানের আহ্বানে আনন্দ র‍্যালি Nov 21, 2025
img
নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Nov 21, 2025
img
নিজের জন্যেও ছোট আনন্দ তৈরি করুন: রাশমিকা মান্দানা Nov 21, 2025
img
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরদের স্মরণ করলো সশস্ত্র বাহিনী Nov 21, 2025
img
'মিস ইউনিভার্স'-এর মঞ্চে ফাতিমার উত্তর মুগ্ধ করল বিশ্বকে Nov 21, 2025
img
নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা করবো : প্রধান উপদেষ্টা Nov 21, 2025
img
ভূমিকম্পে হতাহতদের দেখতে হাসপাতালে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক Nov 21, 2025
img
সিরিজ বাঁচানো ম্যাচে পন্তের নেতৃত্বের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখছেন পন্টিং Nov 21, 2025
৩০০ আসনে ১৫০০ ফরম বিক্রি এনসিপির Nov 21, 2025
নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনার কথা বললেন প্রধান উপদেষ্টা Nov 21, 2025
img
ভয়াবহ ভূমিকম্পে পরিত্যক্ত হতে পারে পুরান ঢাকা: ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক Nov 21, 2025
img
সেনাকুঞ্জ থেকে ফিরোজায় ফিরলেন খালেদা জিয়া Nov 21, 2025
img
উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩, আহত ৭০ Nov 21, 2025
img
ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় জামায়াত আমিরের শোক প্রকাশ Nov 21, 2025
img
অতীত ভাবার বিষয় নয়, উন্নয়নের রাজনীতি করতে চাই : বাবর Nov 21, 2025
img
শেষ ১২ বলে ৫০ রান, ভারতকে বড় টার্গেট দিলো বাংলাদেশ Nov 21, 2025
img
ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় তারেক রহমানের শোক প্রকাশ Nov 21, 2025