রাষ্ট্র ও এস্টাবলিশমেন্টে ছাত্রদের ‘ন্যায্য হিস্যা’ চান উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

রাষ্ট্র ও এস্টাবলিশমেন্টে ছাত্রদের ‘ন্যায্য হিস্যা’ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, সরকারের প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে ছাত্র প্রতিনিধিত্ব রয়েছে মাত্র দুজনের। ফলে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় ছাত্ররা প্রভাবক হতে পারছে না।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা’ শিরোনামে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

মাহফুজ আলম লেখেন, “ক্ষমতার ভরকেন্দ্র অনেকগুলো। কাজের দায় সরকারের, কিন্তু কাজ করে ক্ষমতার অন্যান্য ভরকেন্দ্র। জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব না। রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশে স্টেইক নিয়ে বসে আছে, অথচ ছাত্রদের জায়গা সংকুচিত করা হয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রপতির একটি সিদ্ধান্তের পর ছাত্র প্রতিনিধিদের কোণঠাসা করে রেখেছে এস্টাবলিশমেন্ট। “আমরা দুজন ছাত্র প্রতিনিধি সর্বোচ্চ ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট করতে পারছি, কিন্তু প্রভাবক হতে হলে সুষম ছাত্র প্রতিনিধিত্ব লাগবে।”

স্ট্যাটাসে মাহফুজ আলম আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্ররা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক দলের মতো ট্রিট করা হচ্ছে তাদের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও দেশব্যাপী সংগঠিত হতে পারেনি। মিডিয়া ও ব্যবসায়ে এখনও আওয়ামী লীগের আধিপত্য রয়ে গেছে।”

তিনি বলেন, “বাম-ডানের কালচারাল ক্যাচাল জুলাইকে দুর্বল করেছে। শাহবাগ-শাপলা যেন চিরস্থায়ী হয়ে উঠেছে। ডানপন্থীরা আবেগের বশে প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা রেখেছে, আর বামপন্থীরা শুরু থেকেই সংশয়পূর্ণ অবস্থানে ছিল।”

মাহফুজ আলম জানান, “সবচেয়ে নিবেদিত ছাত্রকর্মীরা দলবাজি, কোরাম বাজি আর ক্রেডিট লড়াইয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকজনের আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগে পুরো ছাত্র-জনতা ডিমোরালাইজড হয়েছে। ফলে ছাত্র-জনতা নতুন কোনো সিভিল সোসাইটি গড়তে ব্যর্থ হয়েছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “শহীদ-আহতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়নি। অভ্যুত্থান শহর থেকে গ্রামে ছড়াতে পারেনি। একদিকে এস্টাবলিশমেন্ট ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থবাদিতা, অন্যদিকে ছাত্রদের অনভিজ্ঞতা ও কৌশলের অভাব—এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।”

স্ট্যাটাসের শেষদিকে তিনি লিখেছেন, “সমাধান একটাই—রাষ্ট্র ও এস্টাবলিশমেন্টে ছাত্রদের ন্যায্য হিস্যা ফিরিয়ে আনা। সেইসঙ্গে ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দালালদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আঘাত হানা। আর তার পূর্বশর্ত হলো—ছাত্রদের মধ্যে সততা, আদর্শ, নিষ্ঠা ও ঐক্য ফিরিয়ে আনা এবং পুরোনো বন্দোবস্তের রক্ষকদের অকার্যকর করে তোলা।”


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ডিবিসিসিআই প্রতিনিধি দলের বৈঠক Nov 16, 2025
img
আসিফ ইস্যুতে বাফুফের কাছে বিসিবি সভাপতির দুঃখ প্রকাশ Nov 16, 2025
img
১০০ গোলও ব্যালন ডি’অর জেতার জন্য যথেষ্ট নয় : কেইন Nov 16, 2025
img
কন্যাসন্তান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে আবারও সমালোচনার মুখে কঙ্গনা Nov 16, 2025
img
এমন এনার্জি নিচ্ছি, ২-৩ দিন ঘুমই আসে না : নুসরাত ফারিয়া Nov 16, 2025
img
যশোরে পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডার শিক্ষকদের কর্মবিরতি Nov 16, 2025
img
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে চাচ্ছে : রিজভী Nov 16, 2025
img
মওলানা ভাসানী যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে: মির্জা ফখরুল Nov 16, 2025
img
ভারতকে গুঁড়িয়ে কলকাতায় শেষ হাসি দক্ষিণ আফ্রিকার Nov 16, 2025
img
'টেস্ট ক্রিকেটের অবমাননা' বলে কলকাতার পিচের সমালোচনায় হরভজন Nov 16, 2025
img
সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : এ এম এম নাসির উদ্দিন Nov 16, 2025
img
সাবেক মন্ত্রী টিপু মুনশি ও তার স্ত্রীর আয়কর নথি জব্দের আদেশ Nov 16, 2025
img
রোনালদোর নিষেধাজ্ঞা কমাতে আনুষ্ঠানিক আপিল করবে পর্তুগাল Nov 16, 2025
img
‘বারাণসী’ তে মহেশ বাবুর মহাকাব্যিক প্রত্যাবর্তন Nov 16, 2025
img
মওলানা ভাসানী গণতন্ত্রের শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে অনুপ্রাণিত করবে: তারেক রহমান Nov 16, 2025
img
চট্টগ্রামে ৩০ বছর ধরে পালিয়ে থাকা হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার Nov 16, 2025
img
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না এলে আন্দোলন অব্যাহত রাখবে ৮ দল: গোলাম পরওয়ার Nov 16, 2025
img
ভারতে গাইতে এসে হেনস্তার শিকার মার্কিন গায়ক একন Nov 16, 2025
img
সাবেক ৪ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ৭ জনের আয়কর নথি জব্দের আদেশ Nov 16, 2025
img
মহেশ বাবুর পৌরাণিক রূপে সূচনা, রাজামৌলির ‘বারাণসী’ ট্রেলারেই কাঁপল বিশ্বমঞ্চ Nov 16, 2025