টানা কয়েকদিনের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান। হামলা ও পাল্টা হামলার মধ্যে সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তির পথে এগিয়ে আসে দেশ দুটি।
মূলত ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তান দেশটিতে পাল্টা হামলা চালায়। আর পাকিস্তানি সেই হামলার মাত্রা দেখে ভারত হতবাক হয়ে পড়ে এবং পরে আলোচনায় আন্তরিকভাবে অংশ নিতে শুরু করে উভয় পক্ষ।
সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার (১০ মে) এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
প্রভাবশালী এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভূমিকা ছিল বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান সরকারের একটি সূত্র। ওই সূত্রটি (সংঘাত নিরসনে) আলোচনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি সিএনএনকে জানান, দু’দেশের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের পর যখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তখনই এই চুক্তির প্রেক্ষাপট তৈরি হয়।
সূত্রটি সিএনএনকে বলেন, শুক্রবার উভয় পক্ষ শান্তিচুক্তির পথে অগ্রসর হচ্ছিল, কিন্তু শনিবার ভোরে ভারত তিনটি পাকিস্তানি বিমানঘাঁটিতে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে ইসলামাবাদ বিস্মিত হয়।
পাকিস্তান মনে করেছিল কূটনৈতিক সমাধান প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান পাল্টা জবাবে ভারতের বিমানঘাঁটি ও কাশ্মির সীমান্তে সামরিক স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা চালায়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানায়, এটি ছিল “চোখের বদলে চোখ” নীতি অনুযায়ী চালানো হামলা।
সূত্রটি জানান, পাকিস্তানের পাল্টা আক্রমণের মাত্রায় ভারত হতবাক হয়ে পড়ে। এরপর শনিবার উভয় পক্ষ আলোচনায় আন্তরিকভাবে অংশ নিতে শুরু করে। যদিও আলোচনা চলার সময়ও ভারত কিছু রকেট নিক্ষেপ করেছিল এবং পাকিস্তান তার পাল্টা জবাবও দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের আশ্বাসের কারণে আলোচনা থেমে যায়নি।
পাকিস্তানি ওই সূত্রটি আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও (ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে) এই আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে “বড় ভূমিকা” পালন করেন। পাশাপাশি সৌদি আরব ও তুরস্কের কর্মকর্তারাও আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।
শনিবার বিকালের পর উভয় পক্ষ আর নতুন কোনও হামলা চালায়নি। এর দু’ঘণ্টা পর আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে সূত্রটি জানাননি, ঠিক কীভাবে রুবিও ভারতের সম্মতি আদায় করেন। ভারতীয় কর্মকর্তারা এ বিষয়ে ভিন্ন অবস্থানে রয়েছেন। তাদের মতে, এই চুক্তি সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করেই হয়েছে; যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার প্রভাব খুব একটা ছিল না।
এসএন