‘তিনি (কার্লো আনচেলত্তি) কখনো ইতালির কোচ ছিলেন না। তিনি কেন ইতালির সমস্যা সমাধান করছেন না, যারা কি না সর্বশেষ (২০২২) বিশ্বকাপেও খেলার সুযোগ পায়নি।’— ২০২৩ সালে কার্লো আনচেলত্তিকে নিয়ে ব্রাজিলে গুঞ্জন শুরুর পর এভাবেই নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা।
রাষ্ট্রপ্রধান বিরোধিতা করেছিলেন বটে, তবে ফুটবল সংস্থা (সিবিএফ)– এর প্রধান এদনালদো রড্রিগেজ যে ছিলেন আনচেলত্তির পক্ষেই। শেষ পর্যন্ত প্রায় অসাধ্য কাজটা করেই ফেলেছেন তিনি। ২০২৫ সালের মে মাস থেকে ব্রাজিল জাতীয় দলের ডাগ আউটে আসছেন ইতালিয়ান কোচ আনচেলত্তি।
আনচেলত্তি কোচের পদে নিশ্চিত হওয়ার আরও একবার এই ইস্যুতে কথা বলতে হলো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভাকে। এবারেও অবশ্য আনচেলত্তির পক্ষে কথা বললেন না লুলা। ইতালিয়ান এই কোচকে দারুণ কোচ হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন বটে, তবে জাতীয় দলে কি দেখতে চেয়েছেন তাকে?
চীনে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে লুলা দা সিলভা বলেন, ‘সত্যি বলতে তিনি বিদেশি হওয়াতে তার বিরুদ্ধে আমার আপত্তি নেই… আমি যা মনে করি, সেলেসাওদের পরিচালনা করার মতো কোচ আমাদের দেশেই আছে।’
লুলা দা সিলভাও সামনে এনেছেন নিজ দেশের কাউকে কোচ করার প্রসঙ্গ। আদতে ব্রাজিল ফুটবলের দীর্ঘ ইতিহাসে প্রথম বিদেশি কোচ হচ্ছেন কার্লো আনচেলত্তি। এর আগে কখনোই কোনো বিদেশি কোচ পূর্ণ মেয়াদে ব্রাজিলের কোচ হননি। ব্রাজিল জাতীয় দলে সর্বশেষ বিদেশি কোচ দেখা গেছে ১৯৬৫ সালে। পাশের দেশ আর্জেন্টিনার ফিলপো নুনেজ এসেছিলেন সেলেসাওদের কোচ হয়ে। তবে তিনি ছিলেন খণ্ডকালীন মেয়াদে।
আবার আনচেলত্তির জন্যেও এটাই প্রথমবার কোনো দেশের জাতীয় দলের দায়িত্ব গ্রহণ। তবে কোচ হিসেবে তাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। ক্লাব পর্যায়ে রয়েছে সুবিশাল অর্জন তার। ফুটবল দুনিয়ার একমাত্র কোচ হিসেবে ইউরোপের টপ ফাইভ লিগের সবকটিতেই জিতেছেন শিরোপা। সঙ্গে আছে কোচ হিসেবে ৫ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার অনন্য কীর্তিও।
আর ঠিক এ কারণেই হয়ত মন থেকে মেনে নিতে না পারলেও আনচেলত্তির কাছ থেকে বড় প্রত্যাশা রয়েছে লুলা দা সিলভার, ‘(আশা করি) তিনি ব্রাজিলকে দলকে সাহায্য করতে পারবেন, প্রথমে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে, তারপর সম্ভব হলে বিশ্বকাপ জিততে হবে’।
উল্লেখ্য, মে মাসের শেষ সপ্তাহ বা ২৬ মে থেকে ব্রাজিলের কোচ হচ্ছেন আনচেলত্তি। ২০২৬ পর্যন্ত ব্রাজিলের কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এই ইতালিয়ান কোচ। মাসিক ৮৫ হাজার ইউএস ডলারের বিনিময়ে ব্রাজিলের কোচ হতে রাজি হয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। বাৎসরিক পাচ্ছেন ১০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। আর এর সঙ্গে আছে বোনাসের অঙ্ক। ব্রাজিলকে ২০২৬ বিশ্বকাপ জেতাতে পারলে আনচেলত্তি বোনাস পাবেন আরও ৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
আরআর/টিএ