এবার রেকর্ড পরিমাণ বাজেট সহায়তা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের জোর প্রচেষ্টায় চলতি অর্থবছরে এই সহায়তা আসছে দেশে। এর আগে করোনা মহামারীতে সর্বোচ্চ ২৫৯ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা এসেছিলো। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে ৪৭০ কোটি ডলারের বেশি বাজেট সহায়তা পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
মূলত ঋণ পেতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি ও বিনিময় হার সংস্কারসহ কিছু শর্ত পালনের বাধ্যবাধকতা ছিল আইএমএফের। অবশেষে সেই জট খুলেছে। শর্ত মেনে ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআরকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে সরকার, যা আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকসহ উন্নয়ন সহযোগীদের চাওয়া ছিল। ফলে আটকে থাকা সব ঋণ ছাড় প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।
এরই মধ্যে চলতি অর্থবছরে ১২০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা এসেছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও ওপেক ফান্ড থেকে। আশা করা হচ্ছে, আগামী জুনের মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে আরো সাত বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ ঢুকবে। অর্থনীতিবিদ ড. মিজানুর রহমান বলেন, জুনের মধ্যে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ানো অসম্ভব কিছু নয়। তবে সেটা শুধু ঋণের ওপর ভিত্তি করে নয়, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের প্রভাবেও। কাজেই আইএমএফের ঋণ না নিলেও অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াত বলে মনে করছেন তিনি।
কিন্তু ই/আর/ডি এর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বব্যাংকসহ বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলো যেকোনো ঋণ অনুমোদনের আগে আইএমফের ডেবিট প্রতিবেদন বিবেচনায় নেয়। আইএমএফের সম্মতি ছাড়া বহুপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীরা ঋণ দেয় না। এদিকে আইএমএফের গ্রিন সিগন্যালের পর নড়েচড়ে বসেছে জাইকা আর এ/আই/আই/বি ও। আগামী ২৬ মে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক-এ/আই/আই/বি এর সঙ্গে আলোচনায় বসবে ইআরডি।
অর্থমন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ-ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, আগামী জুনের মধ্যে আইএমএফের কাছ থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা আসতে পারে। বিশ্বব্যাংক ও এ/ডি/বি তিনটি কর্মসূচির আওতায় আরো ১৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া এ/আই/আই/বি ও জাইকার সঙ্গে আরো ৮১ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তার আলোচনা চলছে, যা ছাড় হতে পারে জুনের মধ্যেই।
এদিকে উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতির ৩৫০ কোটি ডলারের বেশি ছাড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, আইএমএফের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই বাজেট সহায়তা নিশ্চিতের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইআরডি।
ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, এ পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে যে আশ্বাস পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে চলতি অর্থবছরে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি বাজেট সহায়তা পাওয়া যাবে। যা কোনো একক অর্থবছরে সর্বোচ্চ বাজেট সহায়তা। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৫৯ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা পেয়েছিল উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে।
এসএন