সাধারণ নাগরিকদের ভার্চুয়াল জগতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
শনিবার (১৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে "টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট ও প্রযুক্তিসেবা: রাজনৈতিক ভাবনা" শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাইফুল হক বলেন, “আজকের ডিজিটাল যুগে প্রতিটি নাগরিক ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে মানুষকে ইচ্ছেমতো সাইবার বুলিংয়ের শিকার করা হচ্ছে, চরিত্র হননের মাধ্যমে জীবনের অর্জন ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। এমন এক অনিরাপদ পরিবেশে মানুষ প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। দেশের ভেতরে বা বাইরে যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে কার্যকর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে সামাজিক অস্থিরতা ও নৈরাজ্য বাড়বে। প্রযুক্তি সেবার আড়ালে নতুন ধরনের বিপদ তৈরি হচ্ছে।”
তিনি সাম্প্রতিক সময়ে মিডিয়ার স্বাধীনতা প্রসঙ্গে বলেন, “২৪-এর জুলাইয়ের পর সংস্কারের কথা বলা হলেও গত ১০ মাসে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারেনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় মতপ্রকাশ করায় অনেককে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এ সময়ের মধ্যে টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতের দুর্নীতির সামান্য অংশও গণমাধ্যমে উঠে আসেনি।”
সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক অধ্যাদেশ নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, “বর্তমান অধ্যাদেশে নাগরিক সুরক্ষার দিকটি যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি। এটি রাষ্ট্রের সুবিধা বিবেচনায় সংস্কার করা হয়েছে। সময় এসেছে এটিকে নাগরিকবান্ধব করে তোলার।”
আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন। তিনি বলেন, “দেশে আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ খাতের মান উন্নয়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে যারা জনগণের পক্ষে কথা বলেন, তাদের কণ্ঠরোধে নানা কৌশল নেওয়া হচ্ছে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাদের আলমাস, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া এবং লেবার পার্টির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।
টিকে/টিএ