কুড়িগ্রামের উলিপুরে গর্ভবতী ও অসুস্থ গরু গোপনে জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগে এক কসাই ও দুই পশু চিকিৎসককে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এ সময় জব্দকৃত ৮০ কেজি মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলার নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমান আদালত।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বক্কর সিদ্দিক।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার(২০ মে) উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের কিশামত তবকপুর গ্রামে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তবকপুর গ্রামের গরুর মালিক সৌরভ কুমার পালের(৩২) একটি গরু গর্ভকালীন জটিলতায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি পল্লী পশু চিকিৎসককে ফোন করেন। পরে পশু চিকিৎসক গিয়ে ওই গরুটির সিজার করে বাছুর প্রসব করান। এসময় গর্ভবতী গরুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই পল্লী চিকিৎসক গরুর মালিকের সাথে টাকা দেওয়ার চুক্তি করে কসাইকে ডেকে গরু বিক্রি করে দেন। পরে উলিপুর পৌরসভার একতা পাড়া এলাকার কসাই শাহ আলম নাদু গরু জবাই করে মাংস নিয়ে আসার সময় এলাকাবাসী মাংসসহ তাকে আটক করে।
খবর পেয়ে মঙ্গলবার সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ঘটনাস্থলে গিয়ে ৮০ কেজি মাংস জব্দ করেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতে পরিচালনা করেন। এ সময় অসুস্থ গরু বিক্রির উদ্দেশে জবাই করার অভিযোগে দুই পল্লী চিকিৎসক ও এক কসাইকে কারাদণ্ড প্রদান করেন।
দণ্ড প্রাপ্ত দুই পল্লী চিকিৎসক হলেন, উপজেলার পশ্চিম নাওডাঙ্গা গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে পল্লী পশু চিকিৎসক আজিমনুর রহমান (৪২) ও পশ্চিম শিববাড়ী এলাকার পল্লী পশু চিকিৎসক জসিম উদ্দিন (২৮)।
বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন অনুযায়ী আজিমনুর রহমানকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড এবং জসিম উদ্দিনকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
এছাড়াও উলিপুর পৌরসভার একতা পাড়া এলাকার কসাই শাহ আলম ওরফে নাদু(৩৮)কে পশু জবাই ও মানুষের মান নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৪(১) ধারা অনুযায়ী এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। সেই সাথে গরুর মালিক সৌরভ কুমার পাল(৩২)কে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের পর অসুস্থ গরু জবাই করার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, অসুস্থ গর্ভবতী গরু জবাই করে মাংস বিক্রির উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়ার সময় কসাইসহ দুই পল্লী পশু চিকিৎসককে এলাকাবাসী আটক করে প্রশাসনকে অবগত করে। পরে আজ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুই পল্লী পশু চিকিৎসক ও একজন কসাইকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আরএ