মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডোরের নামে দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে না দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে সতর্ক করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেছেন, আমাদের বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। এই দেশটাকে মানবিক করিডোরের নামে যুদ্ধের মধ্যে নিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এদিকে না গিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের উদ্যোগে রাখাইনে মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত নাগরিক সমাবেশে এসব কথা বলেন বিএনপির এ নেতা।
দুদু বলেন, আমি ড. ইউনূসকে অনুরোধ করবো, মানবিক করিডোরের দিকে না এগিয়ে আপনি বরং বাংলাদেশের মানুষকে কীভাবে রক্ষা করা যায়, যুদ্ধমুক্ত রাখা যায় এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা যায়, সে ব্যবস্থা করুন। আজকের যে প্রজন্ম, যাদের বয়স ২৫-৩০ বছর; তারা একটা নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি। সেই ভোটের ব্যবস্থা করুন এবং মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটা বন্দর নিয়ে কথা উঠেছে। জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক যিনি বর্তমান সরকার প্রধানের সহকারী উপদেষ্টা তিনি বলেছেন, কারো সাথে কোনো আলোচনা করার প্রয়োজন নেই। তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এই সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) মাত্র একটি কাজ। জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তারা চলে যাবে। এটা কোনো রেগুলার সরকার নয়, নির্বাচিত সরকার নয়। অনেক উপদেষ্টা বলেছিলেন, তারা নির্বাচিত। আত্মপ্রতারণা করা ঠিক হবে না। দেশের জনগণ আপনাকে (ড. ইউনূস) সম্মানের সঙ্গে বসিয়েছে, সম্মান রক্ষা করে জনগণের সেন্টিমেট অনুধাবন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে যাবেন।
শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ, কামার-কুমার, রিকশা চালক, কুলি-মজদুর, কৃষক-শ্রমিক তাদেরকে এত অবহেলা করা উচিত নয়। তাদের রক্তে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই বাংলাদেশে যুদ্ধের সময় ভদ্রলোকের সংখ্যা ছিল কম। গ্রামের কৃষক-শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ যুদ্ধ করেছিল। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান যেমনিভাবে তরুণ ও শিক্ষার্থীরা করেছে। তেমনিভাবে মুক্তিযুদ্ধেও তরুণ এবং শিক্ষার্থীরা ছিল।
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি মো. শামিম কায়সার লিংকন, কৃষকদলের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক রাজি, সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি, জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকনসহ প্রমুখ।
আরআর/টিএ