প্রেক্ষাগৃহে ‘চোখ তুলে দেখো না’ গানটা দেখে দর্শক চেয়ার ছেড়ে উঠে পর্দার সামনে নাচানাচি করত। কথা হচ্ছিল ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ ছবির। মাল্টিপ্লেক্সের যুগে অবশ্য এমন উন্মাদনার ছবি বিরল। ফের যেন সেই উন্মাদনাই ফিরছে, তা-ও আবার ২৫ বছর পর।
আগামী ৩০ মে পুনরায় মুক্তি পেতে চলেছে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জুটির এই ছবি।
ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের ফিসফাস, তাদের পর নাকি সে ভাবে আর কোনও ‘জুটি’ পায়নি বাংলা ছবি। এ বার ২৫ বছর পর ফের বড় পর্দায় সেই প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটি। দেখতে দেখতে যে ২৫টা বছর কেটে গিয়েছে, বিশ্বাস করতে পারছেন না ঋতুপর্ণা। বুম্বা-ঋতু জুটির সে রকমই অজানা সব গল্প শোনালেন গণমাধ্যমকে।
সেই সময়ের ঋতু এখন ঠিক কতটা বদলে গিয়েছে? নায়িকা অবশ্য এক কথায় মেনে নেন, সেই সময়কার ঋতু খানিকটা অপরিণত ছিল। যদিও মানুষটা এক রয়ে গিয়েছে, খুব বেশি বদল ঘটেনি। ঋতুপর্ণার কথায়, ‘‘আমার কাছেও খুব বিস্ময়ের ব্যাপার, কী ভাবে ২৫ বছর কেটে গেল বুঝতে পারলাম না। ২৫ বছর ধরে একটা সিনেমাকে আমরা বয়ে নিয়ে এসেছি। আজও সব বিয়েবাড়িতে এই গানটা বাজে। জীবনে কিছু জিনিস থেকে যায়।’’
তেমনই রয়ে গিয়েছে যেন প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার রসায়নও। মাঝে অবশ্য বিরতি দিয়েছেন। কিন্তু তার পর যখন প্রত্যাবর্তন হল, বিন্দুমাত্র বুঝতে দেননি দর্শককে। কিন্তু তাঁদের সম্পর্কে সে কাল-এ কালে আদৌ কি কিছু পরিবর্তন ঘটেছে? নায়িকা ‘পরিবর্তন’ মানতে নারাজ।
তবে তিনি বলেন, ‘‘আমি আর প্রসেনজিৎ যখন পর্দায় থাকি তখন সব কিছু ভুলে যাই। আমাদের কাছে তখন ওই চরিত্রগুলোই বাস্তব হয়ে ওঠে। ওর বাইরে কোনও জীবন আছে, সেটা ভুলে যাই। আমাদের তখন ওই মুহূর্তগুলো হয়ে ওঠে আপসহীন।’’
প্রেমের ছবিতে যে তারা ভীষণ রকম জীবন্ত, মেনে নিচ্ছেন অভিনেত্রী। যাদের কেরিয়ারে এতগুলো প্রেমের ছবি, কখনও কি মন এক মুহূর্তের জন্য দুর্বল হয়নি একে অপরের কাছে? ঋতুপর্ণার কথায়, ‘‘প্রেমটা আমাদের কাছে অন্য রকম। দু’জনে দু’জনের প্রতি রয়েছে আস্থা, নির্ভরতা ও ভরসার জায়গা। সেটা এতটা সুন্দর যে আমরা বছরের পর বছর কথা না বললেও সেই জায়গা রয়ে যাবে।’’
এত বছর এই জুটির এমন আবেদন দর্শকমহলে দেখে নিজেই আনন্দিত নায়িকা। যদিও এই ছবির পুনরায় মুক্তির খবর তিনি প্রথম পেয়েছিলেন প্রসেনজিতের কাছ থেকেই। তিনি যেমন আনন্দিত, তেমনই জোর গলায় বলেন, ‘‘ ইন্ডাস্ট্রিতে ২৫ বছর ধরে একই রকম জনপ্রিয়তা আর কোনও নায়ক-নায়িকার আছে বলে আমার জানা নেই।’’
নায়িকার মতো একই রকম উত্তেজনা বোধ করছেন প্রসেনজিৎ। তার কথায়, ‘‘ আমি খুবই উত্তেজিত। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা হলে গিয়ে ছবিটা দেখতে পারবে, এটা বড় সুযোগ তাদের কাছে।’’
আরএম