একদিকে মালায়ালাম চলচ্চিত্রশিল্পের নিরব কিন্তু ধারাবাহিক সাফল্য, অন্যদিকে টালিউডে তারকাদের বিরাট বিরাট ঘোষণার মধ্যেও রয়েছে প্রলম্বিত নিরবতা। এই বৈপরীত্য এখন চোখে পড়ার মতো এবং টালিউডের ভেতরে এক গভীর আত্মবিশ্লেষনের দরজা খুলে দিয়েছে।
বর্তমানে তেলুগু চলচ্চিত্রের শীর্ষ তারকারা যখন তাঁদের ছবি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন বিশাল বাজেট আর সর্বভারতীয় প্রচারণার দিকে, তখন মালয়ালম তারকারা নিঃশব্দে বছরে একাধিক সৃজনশীল এবং ভিন্ন ধারার ছবি উপহার দিচ্ছেন। মম্মুটি ও মোহনলাল থেকে শুরু করে ফাহাদ ফাসিল, দুলকার সালমান কিংবা পৃথ্বীরাজ—প্রায় সবাই বছরে দুই থেকে চারটি ছবি করছেন, বিভিন্ন ঘরানা ও মাধ্যম মিলিয়ে। কেউ থেমে নেই। শুধু থিয়েটার নয়, ওটিটিতেও সমান তালে সক্রিয়।
এই ধারাবাহিকতা এসেছে একটি সুসংগঠিত পরিকল্পনা, নির্দিষ্ট বাজেট কাঠামো, নির্মাতাদের সৃজনশীল স্বাধীনতা এবং কনটেন্ট-ভিত্তিক মনোভাব থেকে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে স্টাররা নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছেন চিত্রনাট্যের সঙ্গে, বাজেট নয়, গুরুত্ব পাচ্ছে গল্প।
অপরদিকে টলিউডে চলছে বড় নাম, কিন্তু তার চেয়েও বড় অনুপস্থিতি। অধিকাংশ সুপারস্টার দুই বছরে একটি করে ছবিতেই সীমাবদ্ধ। বাজেট বিপুল, কিন্তু কাজের হার আশঙ্কাজনকভাবে কম। প্রযোজকেরা মাঝারি বাজেটের ছবির পরিকল্পনা করলেও তারকারা তাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে থিয়েটারে ছবি নেই, দর্শক হলমুখী হচ্ছেন না, আর ইন্ডাস্ট্রির গতি থমকে আছে।
মালায়ালম ইন্ডাস্ট্রি প্রমাণ করে দিচ্ছে, বেশি কাজ আর ভালো কাজ পরস্পরবিরোধী নয়। তারা উপস্থিত, প্রভাবশালী এবং সৃজনশীল—বিনা চোখ ধাঁধানো বাজেটেই। টলিউড যদি আবার নিজের গতি ফিরে পেতে চায়, তাহলে মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন এখনই। বেশি প্রচারণা নয়, এখন প্রয়োজন কম অপেক্ষায় বেশি নির্মাণ—শেখার সময় এখনই।
আরএ/টিএ