কিছু মানুষ অনির্বাচিতভাবে ক্ষমতায় থাকা লাভজনক মনে করছে : আব্দুন নূর তুষার

কিছু মানুষ অনির্বাচিতভাবে ক্ষমতায় থাকাকে লাভজনক মনে করছে, বলেছেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও বিশ্লেষক আব্দুন নূর তুষার। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীনর সরকার আসার পর তাদের প্রথম এবং সবচেয়ে নিশ্চিত বিষয়টা ছিল নির্বাচন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আব্দুন নূর তুষার বলেন, তারা যাবেন কীভাবে? একটা নির্বাচন দিয়ে তাদের যেতে হবে।

অন্তর্বর্তী মানে হচ্ছে ক্ষমতা গ্রহণ থেকে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত তারা অন্তর্বর্তী। ফলে তারা আর কি করবেন আর না করবেন এই দায়িত্ব তারা ঠিক করতে না পারলেও এই একটা কাজ তাদের প্রথম দিন থেকে নিশ্চিত; তাদের নির্বাচন করতে হবে। ফলে নির্বাচন করার লক্ষেই তাদের বাকি কাজগুলো করতে হবে। অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন থাকার মানেই হচ্ছে সরকারকে ব্যবহার করে কোটারি স্বার্থ যারা হাসিল করেন তাদের সুযোগ তৈরি হওয়া।

তিনি বলেন, আপনি দেখেন সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু ভোটিং পদ্ধতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। ভোটিং পদ্ধতির জন্য বাংলাদেশ স্বৈরাচার তৈরি হয়নাই। স্বৈরাচার তৈরি হয়েছে— ভোটিং পদ্ধতিতে বলা হয়েছে ভোট গুনতে হবে; ভোট গোনা হয়নাই। ভোট সবার সামনে গোনেন, কোনো সংস্কারের দরকার নাই।

যে ভোট দিতে এসেছে সে যদি জানে তার ভোটটি গোনা হচ্ছে তাহলে সেটি একটি গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন।

তিনি আরো বলেন, ভোট যারা গোনে তারা দুর্নীতি করেছে; কোথাও বলা ছিল রাতের বেলা ভোট দিতে হবে, দিনের বেলা দেওয়া যাবে না? ভোটের সিস্টেমে কোথাও লেখা ছিল? এসপি ডিসিরা মিলে ভোট করবেন। এই সরকার কিন্তু একাধিক সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। তার মানে দেখিয়ে দিয়েছেন কারা এই দোষী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল।

পরোক্ষ ভোটিং ইস্যুতে তিনি বলেন, একটা ধোঁয়া উঠেছে ইন ডাইরেক্ট ভোটিং হবে।

স্থানীয় সরকার, সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে কাউন্সিলররা আগে নির্বাচিত হবে, তারা পরে ভোট দিবেন। ঢাকা শহরের কথা চিন্তা করেন, ১২৯ জন কাউন্সিলর আছেন। এখন আমি যদি বুঝতে পারি আমি ৫০ জন কাউন্সিলরের ভোট পাবো, বাকিটা পাবো না। ৯ জন কাউন্সিলরকে কেনা সহজ নাকি কোটি ভোটারকে কেনা সহজ?

তিনি বলেন, কোটি ভোটারের ভোটকে বন্ধ করে দিয়ে তারা ৯ জনকে কেনার সুবিধা করে দিতে চাইছেন কোনো একজন ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে। তার যদি টাকা থাকে, প্রতিপত্তি থাকে, লোকবল থাকে তাহলে তিনি চাইলে বাকি ৯ জনকে কিনে ফেলবেন। এটা হচ্ছে ঝামেলা। ডিরেক্ট ভোটিং থেকে ইনডাইরেক্ট ভোটিং পদ্ধতিতে যাওয়া মানেই হচ্ছে আগের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করে এমন ব্যবস্থা বানাও যে কম ভোট পেয়েও মেয়র হয়ে যেতে পারেন। এইটা তো আমেরিকা না। এগুলো তৈরিই করা হচ্ছে যাতে ঐক্যমত না হয় এবং নির্বচন পিছিয়ে দেওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, সমস্যা আছে নির্বাচন কমিশনে। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ করেনা। বিভার বিভাগে সমস্যা নেই; সমস্যা আছে বিচারক যেভাবে নিয়োগ হয়। সেইটা যদি আপনি ঠিক করতে চান তাইলে সংবিধান সংস্কার করতে হবে। বিচার বিভাগের কাছ থেকে ইনসাফ আশা করে তারাই কিন্তু আবার বিচার বিভাগের মধ্যে মিছিল করেছেন।

সংস্কার ইস্যুতে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী যে আইন আছে সেটা ঠিকমতো বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশে একটা দুর্নীতিও হওয়া সম্ভব না। কিন্তু আজকে দুর্নীতির অভিযোগে অন্তত একজন উপদেষ্টার সহকারীকে অপসারণ করা হয়েছে এবং একজনকে শোকজ করা হয়েছে। দুর্নীতি তো তারা নিজেরাই বন্ধ করতে পারছে না। দুর্নীতি করে এমন লোককে প্রিভিলেজ কোটায় স্বাস্থ্যবিভাগে নিয়োগ দিয়ে যিনি নিয়ে এসেছেন তিনি সংস্কার করবেন?  

আরএ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ডিসেম্বরের ১৩ দিনেও কোনো রেমিট্যান্স আসেনি দেশের ১০ ব্যাংকে Dec 15, 2025
img
কলম্বিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অন্তত ১৭ জনের, আহত ২০ Dec 15, 2025
img
স্বর্ণ কিনবেন? জেনে নিন আজকের বাজারদর Dec 15, 2025
img
৩ দাবিতে আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা ডাকসুর Dec 15, 2025
img
রাজধানী ঢাকায় কমবে দিনের তাপমাত্রা Dec 15, 2025
img
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি, কমেছে দাম Dec 15, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুক হামলার ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে ১৬ Dec 15, 2025
img

চানখারপুলে ছয় হত্যা

হাবিবুর রহমানসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু আজ Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদির ঘটনায় মেহেরপুর সীমান্তে বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার Dec 15, 2025
img
এমবাপে ও রদ্রিগোর গোলে আলাভেসের বিপক্ষে স্বস্তির জয় রিয়াল মাদ্রিদের Dec 15, 2025
img
এলাকার উন্নয়নে ঐক্যের আহ্বান হাবিবুর রশিদ হাবিবের Dec 15, 2025
img
শব্দদূষণকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে: রিজওয়ানা হাসান Dec 15, 2025
img

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

হলান্ডের জোড়া গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসকে বড় ব্যবধানেই হারাল ম্যানচেস্টার সিটি Dec 15, 2025
img
আজ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হবে সিঙ্গাপুর Dec 15, 2025
img
১৫ ডিসেম্বর: ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা Dec 15, 2025
img

বুন্ডেসলিগা

টেবিলের তলানির দলের বিপক্ষে কোনোমতে হার এড়াল বায়ার্ন মিউনিখ Dec 15, 2025
img
ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রবাসীদের দেশ গড়ায় অবদান রাখার আহ্বান Dec 15, 2025
img
সিডনির ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন মুসলিম ফল ব্যবসায়ী Dec 15, 2025
img
বৃহস্পতিবারের মধ্যে চূড়ান্ত হচ্ছে বিএনপির শরিকদের আসন Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা Dec 15, 2025