ফ্রেডরিক ম্যাক্স মুলার, জার্মান বংশোদ্ভূত প্রখ্যাত ভারতবিশারদ, দার্শনিক, ধর্মতত্ত্ববিদ, সমাজতত্ত্ববিদ, সংস্কৃত ভাষার সুপণ্ডিত ও অনুবাদক।
১৮২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর, তৎকালীন প্রুশিয়া সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত আন্হাল্ট রাজ্যের রাজধানী ডেসাউ শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর বাবা উইলহেম মুলার ছিলেন একজন বিশিষ্ট রোমান্টিক কবি ও গ্রন্থাগারিক। মা এডেদলহেইড মুলার ছিলেন অ্যানহাল্ট-ডেসাউ শহরের মুখ্যমন্ত্রীর বড় মেয়ে।
মাত্র চার বছর বয়সে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। ফলে শৈশবকাল আর্থিক দুর্দশার মধ্য দিয়ে কেটেছে। শৈশবে ম্যাক্স মুলার সঙ্গীত শেখা শুরু করেন এবং দ্রুত সঙ্গীতে দক্ষ হয়ে উঠতে থাকেন। কিন্তু গান শিখে ভবিষ্যতে আর্থিক উন্নতির সম্ভাবনা নেই, এ বিবেচনায়, পারিবারিক বন্ধুদের পরামর্শে লেখাপড়া শুরু করেন।
১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বারুখ স্পিনোজা'র দর্শন-চিন্তার উপর লিখিত অভিসন্দর্ভের জন্য 'লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়' থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থের সন্ধানে প্যারিস থেকে লণ্ডনের ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির অফিস লাইব্রেরির সঙ্গে যুক্ত হন। এই সময় তিনি 'জার্মান লাভ' নামক একটি উপন্যাস লিখে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে লন্ডন থেকে তিনি অক্সফোর্ডে চলে আসেন। একই সঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতিবিদ যোগদান করেন। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি ব্রিটিশশাসিত ভারতের শিল্প-সংস্কৃতিবিষয়ক অন্যতম বুদ্ধিজীবী ও ভাষ্যকার হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।
১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ইউরোপীয় ভাষা বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগ দেন। ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত হন। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর 'প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস' গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
১৯০০ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ অক্টোবর, অক্সফোর্ড নগরে তিনি মারা যান।
তার একটি উক্তি হলো-
“সূর্যের আলো ছাড়া যেমন ফুল
ফুটতে পারে না, তেমনি ভালোবাসা ছাড়া
মানুষ বাঁচতে পারে না।”