আইপিএল শিরোপা জয়ের পরের দিন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ছিল আরসিবি বরণপর্ব। ১৮ বছরের আইপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বেঙ্গালুরু। আর তাই চ্যাম্পিয়ন দলকে একবার দেখবে বলে উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকেই জয়ী দলকে দেখবে বলে বহু সমর্থক হাজির ছিলেন। তখনই বিপত্তি। ভিড়ের মধ্যে আচমকা পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। আর এমন মর্মান্তিক ঘটনায় সোশাল মিডিয়ায় ‘অ্যারেস্ট বিরাট কোহলি’ ট্রেন্ড ঊর্ধ্বমুখী। সেখানে পুষ্পা-২-এর আল্লু অর্জুনকে উদাহরণ হিসেবে টেনে বিরাট কোহলিকেও গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।
স্টেডিয়ামে যখন ‘আরসিবি বন্দনা’, বাইরে তখন পদপিষ্টের ঘটনায় ১১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬৭-র বেশি। প্রায় পাঁচ হাজার নিরাপত্তারক্ষী শিল সেখানে। এত ভারী সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষী থাকার পরেও কেন এমন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে, স্টেডিয়ামের বাইরে যখন স্বজনহারাদের কান্না, তখন ভিতরে কীভাবে আরসিবি’র ভিক্ট্রি ল্যাপ চলছে। ক্রিকেটারদের কাছে কি কোনও খবর পৌঁছয়নি? প্রশাসনই বা এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর সেলিব্রেশন জারি রাখার অনুমতি দিল কীভাবে? সেই কারণে সোশাল মিডিয়ায় কোহলিদের নিয়ে সমালোচনার ঢেউ।
নেটিজেনদের অভিযোগ, স্টেডিয়ামের বাইরে যখন এমন মর্মান্তিক ঘটনা, সেই সময় কোহলি-পাতিদাররা সেলিব্রেশনে মেতে ছিলেন। আর এতেই রেগে কাঁই নেটিজেনরা। একজনের কথায়, ‘গোটা জাতি এখন গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছে। আরসিবি’র জন্য লজ্জা!’ এখানেই শেষ নয়। ‘অ্যারেস্ট কোহলি’ (#ArrestKohli) ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। এক নেট নাগরিক লেখেন, ‘এমন ঘটনার জন্য কোহলি-সহ অন্যান্য ক্রিকেটাররা নৈতিকভাবে দায়ী।’ আর-একজন তো ছ’মাস আগের ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। গত ৪ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক অনুরাগীর। যার জেরে আইনি জটিলতায় জড়ান দক্ষিণী তারকা। গত ডিসেম্বর মাসে জেলেও যেতে হয় তাঁকে। ওই ইউজারের কথায়, ‘আল্লু অর্জুনকে যদি জেলে যেতে হয়, তাহলে বিরাটও কয়েক মাস হাজতবাস করুক।’
একজন লেখেন, ‘২০২৫ সালের কুম্ভের পর কাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল? শুধু নিরীহ মানুষদেরই লক্ষ্যবস্তু করা হয়? ঠিক যেমন কোহলি এবং আল্লু অর্জুন। প্রিয় কোহলি, ট্রফি উপভোগ করো।’ যদিও কোহলির সমর্থনে এগিয়ে এসে এই ভক্ত বলেন, ‘বিরাটকে লক্ষ্য বানানো বন্ধ করুন। তিনি দোষী নন। বেঙ্গালুরুতে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল, তাদের দোষারোপ করুন।’
উল্লেখ্য, প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে বিরাট কোহলি-সহ গোটা আরসিবি দল। মৃতদের পরিবারপিছু ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। যদিও এতেও বিতর্ক থামছে না। কীভাবে প্রায় ২ লক্ষ সমর্থক ৩৩ হাজার ধারণক্ষমতা যুক্ত চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামমুখো হয়েছিলেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে বেঙ্গালুরুতে সমর্থক মৃত্যুতে গ্রেফতার করা হয়েছে আরসিবির মার্কেটিং হেড নিখিল সোসালেকে। পুলিশের জালে ইতিমধ্যেই ৪ জন। এই চারজনকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরআর/টিএ