ভারতীয় চলচ্চিত্রে যার নামই এক ইতিহাস, সেই কিংবদন্তি গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার এবার সরাসরি তোপ দাগলেন বলিউডের বর্তমান অবস্থা নিয়ে। তার মতে, হিন্দি সিনেমা এখন আত্মাহীন, গ্ল্যামারে মোড়া হলেও মাটির সংযোগ হারিয়ে ফেলেছে। আর এই কারণেই বলিউড দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে দক্ষিণী ছবির তুলনায়।
জাভেদ আখতারের কথায়, আজকের অনেক হিন্দি চলচ্চিত্র নির্মাতা মুম্বাইয়ের দ্বিতীয় প্রজন্মের বাসিন্দা। তাদের বেড়ে ওঠা শহুরে পরিবেশে, যাদের কল্পনা দৌড় ইংরেজি স্বপ্নে হলেও, তারা ভুলে গেছেন ভারতীয় জীবনের বাস্তব আবেগ। ফলে যেসব ছবি তৈরি হচ্ছে, তা দেখতে চকচকে হলেও ভিতরটা একেবারে ফাঁপা।
তিনি বলেন, “আজকের বলিউড কেবল স্টারডম আর বিশাল প্রোডাকশনের মোহে আটকে আছে। অথচ স্ক্রিপ্টে নেই সেই আবেগ, চরিত্রে নেই গভীরতা, আর দৃশ্যপটে নেই সত্যিকারের বাস্তবতা। স্পেশাল এফেক্ট দিয়ে আবেগ ঢেকে রাখা যায় না।”
তিনি তুলনা করেন দক্ষিণ ভারতের সিনেমার সঙ্গে। ‘আর আর আর’, ‘কান্তারা’, ‘জয় ভীম’, ‘সীতা রামম’ কিংবা ‘হাই নান্না’র মতো ছবিগুলোর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “ওরা নিজেদের গল্প নিজের ভাষায় বলে। স্থানীয় সংস্কৃতি, আবেগ সব বজায় রেখেই বানায় ছবি। তাই তা হয়ে ওঠে সার্বজনীন।”
তার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে একটা গভীর দুঃখ, “বলিউড একসময় হৃদয় ছুঁয়ে যেত। আজ সে হৃদয়টাই নেই। আমরা শুধু বাহ্যিক রূপ দেখিয়ে যাচ্ছি, অথচ ভিতরের স্পর্শ হারিয়ে ফেলেছি।”
তবে তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘উড়ান’, ‘মাসান’, ‘পিকু’ বা ‘সার’-এর মতো ছবিগুলো প্রমাণ করে দিয়েছে—বলিউড চাইলে পারে। প্রয়োজন কেবল আত্মার খোঁজে ফেরা। তার ভাষায়, “গাছ যতই বড় হোক, শিকড় না থাকলে সে গাছ টিকে না। সিনেমাও তাই।”
জাভেদ আখতারের এই মন্তব্য এখন চলচ্চিত্র জগতে আলোচনার কেন্দ্রে। অনেকেই বলছেন, এ যেন এক প্রয়োজনীয় জাগরণ ঘণ্টা। বলিউড কি এবার আত্মার খোঁজে নামবে? প্রশ্ন উঠেছে দর্শকের মনেও।
এসএম/টিএ