রাষ্ট্রপতি হামিদ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন—সবাই পালায় না, পালিয়ে বাঁচে না: গোলাম মাওলা রনি

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, 'রাষ্ট্রপতি হামিদ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন—সবাই পালায় না, পালিয়ে বাঁচে না। তিনি কোনো উচ্চ শিক্ষিত, পিএইচডি ডিগ্রিধারী মানুষ নন। তিনি আমাদের হামিদ ভাই। ভাটি অঞ্চলের মানুষ, সাধারণ ভাত-ভর্তা খাওয়া মানুষ।

সেই শেকড়ের মানুষটি সারাজীবন নীতি ও আদর্শ আঁকড়ে ধরে থেকেছেন।'

আজ সোমবার রাতে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতিকে তিনি কেন রাষ্ট্রপতি সম্বোধন করলেন ভিডিও বার্তার শুরুতে সেটাও উল্লেখ করেছেন গোলাম মাওলা রনি।

রনি বলেন, 'রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ যখন বিদেশে গেলেন এবং আবার ফিরে এলেন, এই সময়ের মধ্যে যা ঘটেছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

তবে তার আগে বলি, আমি কেন তাকে এখনো ‘রাষ্ট্রপতি হামিদ’ বলছি, কিংবা কেন তাকে ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি’ বলিনি।'

তিনি যোগ করেন, 'আমি দীর্ঘদিন পশ্চিমা দেশে ছিলাম। রাষ্ট্র, অর্থনীতি, রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ হয়েছে। আমি সেই দেশের সরকারি স্কলারশিপে পড়াশোনা করেছি।

সেখানে দেখেছি, জনপ্রতিনিধিদের সম্মান সবসময় অক্ষুণ্ণ রাখা হয়। একজন প্রেসিডেন্ট বা সিনেটরের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরও তাকে প্রেসিডেন্ট বা সিনেটর বলেই সম্বোধন করা হয়। যেমন ক্লিনটন কিংবা বুশ—তারা এখন আর প্রেসিডেন্ট নন, তবুও তাদের প্রেসিডেন্ট বলেই ডাকা হয়।'

'কিন্তু আমাদের দেশে যখন কেউ ক্ষমতায় থাকেন, তখন সবাই তার পায়ের নিচে পড়ে থাকে; আর ক্ষমতা হারানোর পর তাকে তাচ্ছিল্য করা হয়, অপমান করা হয়। আমরা যেমনই হই না কেন, যদি আমরা গণতন্ত্রের মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, তাহলে অতীতের প্রেসিডেন্টদেরও সম্মান করতে হবে—খন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমান, শেখ মুজিবুর রহমান—তাদের সবাইকে যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে স্মরণ করতে হবে।

সেই সংস্কৃতির প্রভাবেই আমি আজ জনাব আব্দুল হামিদকে ‘রাষ্ট্রপতি হামিদ’ বলেছি।'

গোলাম মাওলা রনি বলেন, 'তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষের রাষ্ট্রপতি। একজন দিনমজুর কিংবা রিকশাচালকও তার মধ্যে নিজের প্রতিনিধি দেখতে পেতেন। তার ৬০ বছরের রাজনীতি জীবনে আমরা একবারও স্মরণ করিনি যে তিনি একজন অসুস্থ বৃদ্ধ, চিকিৎসার প্রয়োজনে দেশ ছেড়েছিলেন।'

রনি আরো বলেন, 'আমরা তাকে গালিগালাজ করেছি, পালিয়ে যাওয়া অভিযুক্ত করেছি—যেন তিনি কোনো দস্যু বা গডফাদার! অথচ তিনি আমাদেরই রাষ্ট্রপতি, আমাদেরই স্পিকার, আমাদেরই নির্বাচিত প্রতিনিধি। তিনি হুইলচেয়ারে বসে প্লেনে উঠেছেন, লুঙ্গি পরে ফিরেছেন। এতকিছুর পরও আমরা আমাদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি জাগ্রত করিনি। এই মানসিকতার কারণেই আমরা দিনের পর দিন খারাপ শাসকের দ্বারা শাসিত হচ্ছি।

কারণ আমরা সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে শিখিনি। বাতাস যেদিকে, আমরা সেদিকেই পাল তুলে চলি।'

আরএম


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভোটার নয় এমন কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না Dec 29, 2025
img
এটাই এনসিপির রাজনীতি, এতদিন নাটক করেছে : মাসুদ কামাল Dec 29, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপের সঙ্গে ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে’ আছে ইরান : পেজেশকিয়ান Dec 29, 2025
img
ফ্যাশন ও ফিটনেসের নতুন চেহারায় জাহ্নবীর আবির্ভাব Dec 29, 2025
img
সড়ক ও ভবনের নির্মাণকাজে ঘুষ-অনিয়ম, তিন জেলায় দুদকের অভিযান Dec 29, 2025
img
কুষ্টিয়া সীমান্ত দিয়ে ১৪ ভারতীয়কে পুশব্যাক Dec 29, 2025
img
ভাগ্যশ্রী বোরসে ২০২৬-এ ‘লেনিন’ নিয়ে শক্তিশালী কমব্যাকের প্রস্তুতিতে Dec 29, 2025
img
এনসিপির কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন কুমিল্লা-৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী Dec 29, 2025
img
'শ্রদ্ধা কাপুরের ফি আলিয়ার চেয়ে বেশি' Dec 29, 2025
img
কুমিল্লা-৪ আসনে হাসনাতকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ালেন জামায়াতের প্রার্থী Dec 29, 2025
img
ঘন কুয়াশায় বরিশালের সঙ্গে সারা দেশের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা Dec 29, 2025
img
নাহিদের জন্য আসন ছাড়লেন জামায়াত প্রার্থী আতিকুর Dec 29, 2025
img
নারী ক্রিকেটে দ্রুততম ১০ হাজার রানের রেকর্ড গড়লেন মান্ধানা Dec 29, 2025
img
এক দিনে প্রায় ৩ হাজার স্বাক্ষর সংগ্রহ করলেন তাসনিম জারা Dec 29, 2025
img
অহেতুক সমালোচনায় কান না দেওয়ার পরামর্শ শতাব্দী রায়ের Dec 29, 2025
img
এয়ারপোর্টে মাদক সহ বিমানযাত্রী আটক Dec 29, 2025
img
দিনাজপুরে আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার Dec 29, 2025
img
৩৯ কেন্দ্রের ১৭৮টি বুথে হবে জকসুর ভোটগ্রহণ Dec 29, 2025
img
সারা দেশে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা Dec 29, 2025
img
মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে এসে গুলি, প্রাণ গেল যুবদল নেতার Dec 29, 2025