সাড়ে ৩২ লাখ কনটেইনার, ১২ কোটি মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং ও ৪ হাজার জাহাজ ভিড়িয়ে চলতি অর্থবছরেই আগের সব রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। অথচ অর্থবছরের শুরুতে টানা তিন মাস রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ছাত্র জনতার কঠিন আন্দোলনের মধ্যদিয়েই শুরু হয়েছিল ২০২৪-২৫ অর্থ বছর। যা চলমান ছিল গত বছরের জুলাই-আগস্ট, টানা দুই মাস। এরপর দেশের বিভিন্ন জেলায় শুরু হয় আকস্মিক বন্যা। এর প্রভাবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিপর্যয়ের কবলে পড়ে দেশের অর্থনীতি। স্তিমিত হয়ে পড়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য।
তবে অক্টোবর থেকে ম্যাজিক্যালি ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি। বিশেষ করে চলতি অর্থ বছরের ১৪ জুন পর্যন্ত ৩১ লাখ ৬৩ হাজার কনটেইনার, সাড়ে ১২ কোটি মেট্রিক টন কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিং করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। একইসঙ্গে বন্দরে ভিড়েছে পণ্যবাহী ৩ হাজার ৯০০ জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হার্বার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, দেশে আমদানি-রফতানি প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে বন্দরে নানামুখী সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে।
বন্দরের মতোই চলতি অর্থবছরে ৬ লাখ ৮৮ হাজার রফতানি এবং ২ লাখ ৫৪ হাজার আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়েছে ২১টি বেসরকারি অফডক। অফডক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব বলেন, দেশের সার্বিক রফতানি পণ্যের প্রায় পুরোটাই হ্যান্ডেল করছে অফডক। তাই এই প্রবৃদ্ধিটা দেশে সামগ্রিক রফতানি খাতের প্রবৃদ্ধির পরিচায়ক।
সংকটের মাঝেও তৈরি পোশাক খাত রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখায় এই অর্জন বলে দাবি করেছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিক অর্থাৎ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই।
একইভাবে এসেছে গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক এমডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কার্যক্রম প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও সচল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় কাজ করা হয়েছে।
লয়'ড লিস্ট অনুযায়ী বিশ্বের ১০০টি ব্যস্ততম বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৬৭তম। মূলত কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করেই এই তালিকা করা হয়।
আরএম/টিএ