নিখোঁজের দুই দিন পর শীতল নামের এক মডেলের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার ভারতের হরিয়ানার সোনিপাতের খরখোদা এলাকায় একটি খাল থেকে ২৩ বছর বয়সী মডেল শীতলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে শীতলের প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর পুলিশি জেরায় হত্যার দায় স্বীকার করেছেন সেই প্রেমিক।
উত্তর ভারতের হরিয়ানার মডেল শীতল, যিনি সিমি চৌধুরী নামেও পরিচিত ছিলেন, মরদেহ উদ্ধারের সময় তার গলা কাটা ছিল। সোমবার (১৬ জুন) সকালে খারখোদা এলাকায় খাল থেকে তার গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হাতে ও বুকে উলকি দেখে পরিবার নিশ্চিত করে—এটাই মডেল শীতল চৌধুরীর দেহ। তার শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল।
তাই প্রাথমিক তদন্তে এটি খুনের ঘটনা বলেই ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় শীতলের প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়। তার নাম সুনীল। পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার রাতে সুনীল ও শীতল চৌধুরীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়, যা পরে শারীরিক নির্যাতনে রূপ নেয়।
সুনীল তাঁকে বেধড়ক মারধর ও একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে মরদেহ গাড়িসহ খালে ফেলে দেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবার পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত প্রেমিক সুনীল নিজেই হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশের ভাষ্য মতে, গত শনিবার (১৪ কজস) রাতে পানিপাতের আহার গ্রামে একটি মিউজিক ভিডিও শুটিংয়ে অংশ নিতে যান শীতল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সুনীল সেখানে পৌঁছান এবং শীতলকে গাড়িতে নিয়ে যান। তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়, যা পরে সহিংস রূপ নেয়।
রাত প্রায় দেড়টার দিকে শীতল তার বোন নেহাকে ভিডিও কলে জানান, সুনীল তাকে মারধর করছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই শীতলের ফোন বন্ধ হয়ে যায় এবং এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীরা জানান, সুনীল এরপর শীতলকে বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি একাধিকবার ছুরিকাঘাত করেন। পরে তার দেহ ও গাড়িটি খালের পানিতে ফেলে দেন।
রবিবার (১৫ জুন) সকালে সোনিপাতের এক খালে সুনীলের গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। তবে গাড়ির ভেতরে শীতলের কোনো চিহ্ন মেলেনি। পানিপথের একটি হাসপাতালে সুনীলকে পাওয়া যায়, যেখানে সে শীতলকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। কিন্তু এর আগে, সে হত্যাকাণ্ডকে গাড়ি দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে সুনীল। শুরুতে সে দাবি করে, দুর্ঘটনায় গাড়িটি খালে পড়ে যায়। সে কোনোমতে সাঁতরে বেঁচে গেলেও শীতল ডুবে যায়। যদিও পরে পুলিশি জেরায় হত্যার দায় স্বীকার করতে বাধ্য হয় সুনীল।
পুলিশি জেরায় অনেক তথ্যই শেয়ার করেছেন সুনীল। জানা গেছে, শীতল ও সুনীল প্রায় ছয় বছর ধরে পরিচিত। শীতল আগে সুনীলের কারনাল এলাকার একটি হোটেলে কাজ করতেন। সুনীল তাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন। তবে শীতল জানতে পারেন, সুনীল বিবাহিত এবং তার দুই সন্তান রয়েছে এই সত্য জানার পর তিনি বিয়েতে রাজি হননি। অন্যদিকে শীতল নিজেও বিবাহিত ছিলেন এবং তার পাঁচ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
কেএন/টিকে