এবার বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পেতে যাচ্ছেন জুলাই শহীদ পরিবারগুলো। মোট ৮০৪টি পরিবারকে স্থায়ী বসবাসের জন্য এই ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেবে সরকার। প্রতিটি ফ্ল্যাটের মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৯৫ লাখ টাকা; শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্তে নির্মিত এ ফ্ল্যাটগুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাবে তাদের পরিবার। সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ৭৬১ কোটি টাকা।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে ‘৩৬ জুলাই’ আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রকল্কের অনুমোদন পেলে চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরু হয়ে ফ্ল্যাট নির্মাণ কার্যক্রম, যা শেষ হবে ২০২৯ সালের জুনে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান প্ৰদৰ্শন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে বিনামূল্যে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত আবাসিক ফ্ল্যাট প্রদানের ক্ষেত্র তৈরি করা।
এই প্রকল্পের জন্য জমি প্রদান করছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের প্রতি সম্মান, তাদের পরিবারের পুনর্বাসন এবং স্থায়ী বাসস্থানের জন্য বিনামূল্যে ফ্ল্যাট প্রদানের নিমিত্তে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্পের মাধ্যমে শহীদ ব্যক্তিদের পরিবারের পুনর্বাসন করা সম্ভব হবে এবং তাদের জীবনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, উদ্যোগ ভালো, কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে অবকাঠামো নির্মাণে যে বিশাল বরাদ্দ রাখা হয়েছে, সেখানে মানবসম্পদ উন্নয়ন, দক্ষতা তৈরির মতো টেকসই উপায়ে খরচ করাটাই আরও জরুরি ছিল। পরিকল্পনা কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পগুলোর গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে সেগুলো অনুমোদন ও বাজেট বরাদ্দ ছাড়াই সরাসরি এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়।
এ বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নূরুল বাসির বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের জন্য প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। নামের তালিকা অনুযায়ী নিহত পরিবারকে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। তবে এর মধ্যে অনেকে গ্রামে নিহত হয়েছেন। তারা হয়তো ঢাকায় ফ্ল্যাট নাও নিতে পারেন। তাই নিহতদের গেজেটের তালিকা থেকে কিছু কম ফ্ল্যাট করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে আবার নতুন করে ফ্ল্যাট করা হবে।
৭৬১ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের আওতায় ভবনগুলোতে থাকবে উন্নত মানের স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক ফিটিংস, লিফট, জেনারেটর, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, সোলার প্যানেলসহ রেইন ওয়াটার হারভেস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়াও কমিউনিটি ভবন, খেলার মাঠ, বহির্বিদ্যুৎ, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা, ড্রেন, কালভার্ট ও নিজস্ব গভীর নলকূপসহ যাবতীয় সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
এসএম/এসএন